ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ায় ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের কনটেস্ট বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে চার দেশ। এগুলো হলো- আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। গাজা যুদ্ধ ও ভোট অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছিল দেশগুলো।
ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) জেনেভা বৈঠকে নতুন বিধিনিষেধ নিয়ে ভোট হয়। তবে সদস্যদের অধিকাংশ মত দেন— ইসরায়েলকে বাদ দেওয়া নিয়ে আর কোনও ভোটের প্রয়োজন নেই, তাই ইউরোভিশন ২০২৬ পরিকল্পনা অনুযায়ীই চলবে।
ইবিইউর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ স্পেন–আয়ারল্যান্ড
স্পেনের ব্রডকাস্টার আরটিভিই, যারা ইসরায়েলবিরোধী গোপন ব্যালটের দাবি তুলেছিল, জানায়— এই সিদ্ধান্ত উৎসবের আয়োজনে তাদের অবিশ্বাস বাড়িয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের আরটিই জানায়, গাজার মানবিক বিপর্যয় ও ব্যাপক প্রাণহানির পরিপ্রেক্ষিতে এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ তাদের জন্য অবিবেচনাপ্রসূত ও অগ্রহণযোগ্য।
স্পেন ইউরোভিশনের পাঁচ ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি, যারা সরাসরি ফাইনালে ওঠে, কারণ তারা ইবিইউতে সর্বোচ্চ আর্থিক অবদান রাখে।
নতুন নিয়ম ও ইসরায়েলকাণ্ড
প্রায় ৫০টি ব্রডকাস্টার, যার মধ্যে বিবিসিও ছিল, বৈঠকে ভোট দেয় ভোট–কারচুপি ঠেকাতে নতুন নিয়মে। অভিযোগ ছিল, ইসরায়েল এ বছর নিজেদের প্রতিযোগী ইউভাল রাফায়েলকে অনৈতিক উপায়ে ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিবিসি নিউজ জানিয়েছে— নতুন নিয়ম অনুমোদনের সঙ্গে একটি শর্তও ছিল- ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার ওপর নতুন করে কোনও ভোট আর আনা হবে না।
ইবিইউ বলেছে— যে সদস্য দেশগুলো নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারাই ইউরোভিশন ২০২৬–এ অংশ নিতে পারবে।
ইসরায়েলের প্রশংসা ও বিতর্ক
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ এই সিদ্ধান্তকে সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে আখ্যা দেন।
ইসরায়েলি ব্রডকাস্টার কানের সিইও গোলান ইয়োখপাজ বলেন, তাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা ছিল এক ধরনের সাংস্কৃতিক বয়কট, যা ভবিষ্যতে কার ক্ষতি ডেকে আনবে বলা যায় না।
ইউরোভিশন পরিবারে গভীর বিভাজন
নেদারল্যান্ডসের ব্রডকাস্টার আবরোট্রোস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের জনমানুষের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
স্পেন জানায়— ইসরায়েল অংশ নিলে তারা ইউরোভিশন সম্প্রচার করবে না।
স্লোভেনিয়াও জানায়—নতুন নিয়ম তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি।
আর এ ব্যাপারে বেলজিয়াম শিগগিরই তাদের অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নতুন নিয়মকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহে নেবে। সূত্র: দ্য আইরিশ টাইমস, বিবিসি, রয়টার্স

