হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি ব্রিজের দুটি পাটাতন ধ্বসে পড়ে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক মাঝবরাবর আটকে গেছে। এতে ব্রিজটি সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে পড়ায় হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় ব্রিজের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী ও রোগীরা।
ব্রিজটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে স্থানীয়রা নৌকা দিয়ে ব্রিজের নিচ দিয়ে পারাপার করছেন। আর আটকে থাকা ট্রাকটি উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মীরা। তবে দুর্ঘটনায় কেউ নিহত বা আহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচংমুখী পাথরবোঝাই ট্রাকটি ব্রিজে উঠামাত্রই অতিরিক্ত ওজনের চাপে দুটি পাটাতন ভেঙে নিচে বসে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের চাকা ধ্বসে পড়ায় পুরো গাড়িটি ব্রিজের ওপর ঝুলে আটকে পড়ে। এতে বেইলি ব্রিজটির কাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিজের দুই পাশে দ্রুত দীর্ঘ যানজট তৈরি হয় যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি, টমটম, প্রাইভেটকারসহ অসংখ্য যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকলেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটলে সাময়িক সংস্কার করে দেওয়া হয়, কিন্তু স্থায়ী সমাধান না থাকায় যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
তারা বলেন, ‘আজকের দুর্ঘটনায় যদি ট্রাকটি নদীতে পড়ে যেত, প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। তাই জনবহুল রত্না ব্রিজটি দ্রুত স্থায়ীভাবে মেরামতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।’
সড়কে আটকা পড়া যাত্রী মোশাহিদ বলেন, ‘রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটবে বলে আমরা আশঙ্কায় ছিলাম।’
আরেক যাত্রী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় আমরা বড় দুর্ভোগে পড়েছি। নৌকা দিয়ে মালামালসহ যাত্রী পারাপার করতে হচ্ছে।’
হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে অতিরিক্ত লোড ছিল, যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

