যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর বার্নি মোরেনো দেশটিতে দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রথা বাতিল করতে চান। এ জন্য তিনি একটি বিলও উত্থাপন করেছেন। এই প্রস্তাবিত এক্সক্লুসিভ সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট অফ ২০২৫ আইন হিসেবে পাস হলে দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী যেকোনো ব্যক্তিকে মার্কিন নাগরিক হিসেবে থাকতে হলে অন্য দেশের জাতীয়তা ত্যাগ করতে হবে। সেই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একচেটিয়া আনুগত্যের অঙ্গীকার করতে হবে।
এই আইন কার্যকর হলে দ্বৈত নাগরিকত্বপ্রাপ্ত আমেরিকানদের বিদেশি বা মার্কিন নাগরিকত্ব, এই দুটির মধ্যে যে কোনো একটি আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ করার জন্য এক বছর সময় দেওয়া হবে। যারা এই নির্দেশ মানবেন না, তাদের স্বেচ্ছায় মার্কিন নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন বলে গণ্য করা হবে।
কলম্বিয়ায় জন্মগ্রহণকারী এবং ১৮ বছর বয়সে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভকারী ওহাইওর এই সিনেটর একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, আপনি যদি আমেরিকান হতে চান, তবে তা সম্পূর্ণ বা কিছুই না। দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রথা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সময় এসেছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রস্তাবিত আইনটি কার্যকর হলে স্লোভেনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এবং তার ছেলে ব্যারন সরাসরি প্রভাবিত হতে পারেন। মেলানিয়া ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং আনুষ্ঠানিক প্রাকৃতিকীকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকত্ব পান। যদিও তিনি স্লোভেনীয় নাগরিকত্ব ধরে রেখেছেন কি না, তার কোনো সরকারি নিশ্চিতকরণ নেই। তবে অনেক জীবনীমূলক বর্ণনায় বলা হয়েছে যে তিনি তা করেছেন এবং ব্যারনকেও সেই নাগরিকত্ব পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
এছাড়াও, এই বিলের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারেন টেসলা ও স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক, ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাক্তন গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার, অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস এবং সালমা হায়েকসহ আরও অনেক মার্কিন সেলিব্রিটি।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোরেনোর এই পরিকল্পনা সাংবিধানিক বাধার মুখে পড়তে পারে, কারণ এটি ১৪তম সংশোধনীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যা নিশ্চয়তা দেয় যে একজন মার্কিন নাগরিক স্বেচ্ছায় ত্যাগ না করলে তাকে তার নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। যদিও যুক্তরাষ্ট্র দ্বৈত নাগরিকদের কোনো সরকারি তথ্যভান্ডার রাখে না। বৈশ্বিক প্রবাসী প্রকাশনা ইন্টারন্যাশনাল লিভিংয়ের মতে, ৪০ মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান, মোট জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশ আইনত দ্বৈত নাগরিকত্ব ধারণ করতে পারে।
সূত্র: আরটি

