মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেদের শান্তি প্রস্তাব গ্রহণের জন্য ইউক্রেনকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন।
শুক্রবার ফক্স নিউজ রেডিওর দ্য ব্রায়ান কিলমিড শো-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি অনেক সময়সীমা দিয়েছি, কিন্তু যদি মনে হয় বিষয়গুলো ভালোভাবে এগোচ্ছে, তখন সাধারণত সময়সীমা বাড়ানো হয়। তবে আমরা মনে করি বৃহস্পতিবারই উপযুক্ত সময়।’
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, শুক্রবার পরবর্তী সময়ে নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকের সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাকে (জেলেনস্কিকে) এটি পছন্দ করতেই হবে। তিনি যদি এটি (শান্তি প্রস্তাব) গ্রহণ না করেন, তাহলে জেনে রাখা ভালো— তাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো গতি নাই।’
ট্রাম্প আরও বলেন,‘একটা পর্যায়ে তাকে (জেলেনস্কিকে) কিছু না কিছু গ্রহণ করতে হবে।’
ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবে নিজেরা মহান সংকটে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কি।
শুক্রবার কিয়েভে নিজের কার্যালয়ের সামনের রাস্তা থেকে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা এখন ইতিহাসের এক কঠিন মুহূর্ত পার করছি। ইউক্রেনের ওপর চাপ এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ইউক্রেন এখন এক কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি- আমাদের হয়তো সম্মান হারাতে হবে, অথবা (যুক্তরাষ্ট্রের) মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারকে হারাতে হবে।’
জেলেনস্কি বলেন, ‘পরিকল্পনায় যাতে অন্তত দুটি বিষয় নিয়ে কোনো আপস না হয়, তা নিয়ে আমি দিন-রাত লড়াই চালিয়ে যাব। তা হলো- ইউক্রেনের সম্মান ও স্বাধীনতা।’ এর আগে গত বৃহস্পতিবার জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে তিনি প্রস্তুত আছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের ২৮ দফার শান্তি চুক্তি অনুসারে, ইউক্রেনকে নিজেদের পূর্ব দিকের দনবাস অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এ অঞ্চল যেসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ এখনো কিয়েভের সেনাদের হাতে আছে ,তা-ও মস্কোর কাছে ছাড়তে হবে। বিনিময়ে অন্য অঞ্চলে দখলে নেওয়া ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল ছাড়বে রাশিয়া।
প্রস্তাবের আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—ইউক্রেনকে নিজেদের সশস্ত্র বাহিনীর সংখ্যা কমিয়ে ছয় লাখে নিয়ে আসতে হবে। আর ইউক্রেন কখনো ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে না।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন, এ শান্তি-পরিকল্পনার অধিকাংশ শর্ত মেনে নিয়েছে ইউক্রেন। তবে শুক্রবার এ দাবি অস্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

