তিলকে তাল করা, তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া, কিংবা তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। তেল ফসল তিল হারিয়ে গেছে প্রায়। বেঁচে আছে বাগধারা আর উদাহরণে। সেই তিল কুমিল্লায় আবার ফিরেছে। গোমতীর চর জুড়ে বসেছে তিলের উৎসব। তিলের সাদা ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছির দল। কিছু জমির তিল ফসল পরিপক্ক হওয়ায় কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। ভালো ফসল পেয়ে খুশি কৃষকরা। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পালপাড়া এলাকার গোমতীর চরে এই উৎসব দেখা যায়।
পালপাড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, গোমতীর চরে আমার কিছু জমি পতিত পড়ে ছিলো। এখানে কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিনা তিল-২ চাষ করেছি। ৩৩ শতক জমিতে তিলের চাষ হয়েছে। ভালো ফলন পেয়েছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, গোমতীর চরে বিনা তিল-২ চাষ হয়েছে। এটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। কারণ এটির বাজার মূল্য বেশি। কুমিল্লায় ৪টি উপজেলায় আগে দেশি তিল চাষ করতেন কৃষকরা। আমরা গত দুই বছর ধরে তেল ফসল বৃদ্ধির আওতায় সরিষার পাশাপাশি তিল চাষ বৃদ্ধি করেছি। কুমিল্লায় এবার দুই হাজার দুইশত হেক্টর জমিতে তিলের আবাদ হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আগামী তিন বছরে এর চাষের পরিমাণ দ্বিগুণ করা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহিত কুমার দে বলেন, গোমতীর পতিত চরে বিনা তিল-২ এর ভালো ফলন হয়েছে। এটি কৃষকদের নিকট জনপ্রিয় হচ্ছে। এর দুইটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। এক-তিল চাষে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। দুই-চরের পতিত জমি চাষের আওতায় আসছে। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে বিনা তিল-২ এর সাথে অন্য ফসল চাষে কাজ করছি।
এদিকে বুধবার ওই এলাকায় তিল চাষ নিয়ে কৃষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড.মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত পরিচালক মোহিত কুমার দে, উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আশিকুর রহমান।