দেশের বাজারের ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধ

0
দেশের বাজারের ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধ

দেশের মোবাইল বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশ অবৈধ মার্কেটের দখলে থাকায় বৈধভাবে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এবং সরকার বছরে প্রায় ২ হাাজর কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

মোবাইল ফোন ইনডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহিদ ও সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল হকসহ নেতৃবন্দ বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমদানির পাশাপাশি বাংলাদেশে ২০১৭ সালে মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ১৭টি মোবাইল ফোন কারখানা দেশে উৎপাদন করছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে, যেখানে প্রায় ১ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোন এখন কেবল স্থানীয় বাজারেই নয়, ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য নতুন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। মোবাইল ফোন উৎপাদন ঘিরে দেশে আধুনিক প্যাকেজিং, প্রিন্টিং, ব্যাটারি, চার্জার, হেডফোন, ডাটা কেবলসহ আরো অনেক ধরনের কম্পোনেন্ট শিল্প গড়ে উঠেছে, যেখানে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং আরও প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ এখানে কাজ করছে।

এ ছাড়াও, এই শিল্পের সঙ্গে সারা দেশে প্রায় ২০ হাজার অনুমোদিত মোবাইল ফোন বিক্রেতা যুক্ত আছেন, যেখানে প্রায় ৮০ হাজার কর্মী সরাসরি কর্মরত। উৎপাদন ও বিতরণ পর্যায়ে মোট প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ সরাসরি এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। গড়ে প্রতি পরিবারের ৫ জন সদস্য হিসেবে ধরা হলে, কমপক্ষে ৮ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনুমোদিত মোবাইল কারখানাগুলোর ওপর নির্ভরশীল।

তবে দীর্ঘদিন ধরে বৈধ শিল্পের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অবৈধ বা গ্রে হ্যান্ডসেটের প্রবেশ ও ব্যবহার। দেশের মোট মোবাইল বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশ এখন এই অবৈধ মার্কেটের দখলে। এরফলে বৈধভাবে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এবং সরকার বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বাজার চোরাকারবারীদের হাতে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া, অবৈধ ফোন দিয়ে আর্থিক প্রতারণাসহ অনেক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, যার প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করা যায় না। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে অবৈধভাবে আমদানিকৃত বা নিবন্ধনবিহীন ফোন দেশে ব্যবহার করা যাবে না। এই উদ্যোগের ফলে সরকারের হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় নিশ্চিত হবে এবং বাজারে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং ভোক্তার অধিকার সুনিশ্চিত হবে। আমরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here