পাইলস বা হেমরয়েডস (Hemorrhoids) পায়ুপথের একটি রোগ। সহজ ভাষায় পায়ুপথের রক্তনালির স্ফীতি। এর ফলে টয়লেটের সময় বা পরে পায়ুপথ দিয়ে রক্ত যায়, এমনকি তাজা রক্ত। এ সময় পায়ুপথে ফোলা থাকে, যা ভিতর থেকে আসে। সেই সঙ্গে টয়লেট করতে অসুবিধা, চুলকানি, রস বের হওয়া, ভোঁতা ধরনের ব্যথা হওয়া ইত্যাদি হতে পারে। পায়ুপথের আরও বিভিন্ন ধরনের রোগে এ ধরনের লক্ষণ হতে পারে। উপযুক্ত চিকিৎসা, যথাযথ পরীক্ষার মাধ্যমেই একমাত্র এ রোগ নির্ণয় করা যায়। এ রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা ও খুব সহজ। প্রকটোস্কোপ (Proctoscope) নামক একটি ছোট যন্ত্রের মাধ্যমে চিকিৎসক এই রোগ নির্ণয় করতে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা এসব রোগবালাই নিয়ে অনেকেই খুব একটা সচেতন বা কথা বলতে চান না। এতে করে একটা পর্যায়ে জটিলতা বাড়তে থাকে।
চিকিৎসা : প্রাথমিক পর্যায়ে ওষুধপত্র দিয়ে রোগ ভালো করা যায়। কিন্তু রোগ বেড়ে গেলে অপারেশনের প্রয়োজন হয়। অপারেশনের কথা বললেই রোগীরা ভয় পেয়ে যায়। কারণ, অপারেশন মানেই কাটাছেঁড়া আর কাটাছেঁড়া মানেই রক্তপাত আর ব্যথা বেদনা।
কিন্তু এখন সর্বাধুনিক চিকিৎসা এসেছে লেজারের মাধ্যমে। যাতে কোনো কাটাছেঁড়া, সেলাই, ক্ষত নাই। পাইলস রোগীদের কাছে এ লেজার চিকিৎসা এখন অনেকটাই পছন্দনীয়। অন্যদিকে পাইলস নিয়ে ডায়াবেটিস রোগীদের একটু বেশিই সচেতন থাকতে হয়।
অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের নার্ভ বা স্নায়ুগুলোও শুকিয়ে যায়। ফলে কোনো কোনো স্থানে অসুবিধা হলে সাধারণ মানুষ যে ব্যথা বুঝতে পারে, সে ব্যথা বুঝতে পারে না ডায়াবেটিস রোগী। ফলে কোনো জটিল রোগ হলে বা রোগের জটিলতা সৃষ্টি হলে রোগী বুঝতে পারে না, যার ফলে রোগ অনেক সময় অত্যন্ত জটিল হয়ে যায়। পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ যেমন পাইলস, ফিস্টুলা, এনালফিসার ইত্যাদি রোগ যখন ডায়াবেটিস রোগীদের হয় তখন বিশেষ জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীর পায়ুপথের কোনো সমস্যা হলে সেটাকে অবহেলা করা যাবে না।
লেখক : কোলোরেকটল সার্জন, ডা. এরফান কোলোরেকটাল সেন্টার, পান্থপথ, ঢাকা