রাশিয়া-বেলারুশের সামরিক মহড়ায় হঠাৎ হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা

0
রাশিয়া-বেলারুশের সামরিক মহড়ায় হঠাৎ হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা

রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া দেখতে হঠাৎ বেলারুশে হাজির হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তারা। মার্কিনদের উপস্থিতিকে ‘অবাক করে দেওয়ার মতো’ বলে উল্লেখ করেছে বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন জানিয়েছেন, নিজেদের ‘আগ্রহের যেকোনো বিষয়’ দেখতে পারেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনা কর্মকর্তারা বেলারুশে অনুষ্ঠিত রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া ‘জাপাদ-২০২৫’ পর্যবেক্ষণ করেছেন। রাশিয়া ও বেলারুশ উভয় দেশের সামরিক প্রশিক্ষণ মাঠে এ মহড়া শুরু হয়েছে গত শুক্রবার। বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের যেটা আগ্রহের, সেটা দেখতে পারেন। যেখানে যেতে চান, যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন—সব কিছুই উন্মুক্ত।’

বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, কে ভাবতে পারত যে ‘জাপাদ-২০২৫’ মহড়ার আরেকটি দিনের সকাল এভাবে শুরু হবে? বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ২৩টি দেশের প্রতিনিধিরা মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে ন্যাটো সদস্য তুরস্ক ও হাঙ্গেরি এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুই সেনা কর্মকর্তাও উল্লেখযোগ্য। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মার্কিন দুই কর্মকর্তা প্রতিরক্ষামন্ত্রী খ্রেনিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে করমর্দন করছেন। যদিও তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। 

যুক্তরাষ্ট্র ও বেলারুশের মধ্যে সম্পর্ক নতুনভাবে উষ্ণ হচ্ছে, এই সামরিক মহড়ায় মার্কিন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও বেলারুশ রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ইউক্রেনে হামলার সময় মস্কোকে তাদের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধি জন কোয়েল মিনস্ক সফর করেন এবং বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে লুকাশেঙ্কো সম্মত হন ৫২ জন বন্দিকে মুক্তি দিতে, যাদের মধ্যে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিরোধীরাও রয়েছেন। এর জবাবে, যুক্তরাষ্ট্র বেলারুশের জাতীয় বিমান সংস্থা বেলাভিয়াকে নিষেধাজ্ঞা থেকে আংশিক ছাড় দিয়েছে, ফলে তারা আবার বোয়িং বিমানের যন্ত্রাংশ কিনতে ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস পুনরায় চালু করা, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করাই তার ইচ্ছা। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে মধ্যস্থতা করতে তিনি আগ্রহী এবং বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছেন। লুকাশেঙ্কো নিয়মিত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ট্রাম্প গত সপ্তাহে লুকাশেঙ্কোকে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠান, যা তার প্রতিনিধি জন কোয়েলের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাগুলো পশ্চিমা কূটনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময়ে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছে, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ ও ন্যাটোর সঙ্গে ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনা।

সূত্র: রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here