শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষও পিছিয়ে নেই ছাদ কৃষিতে। ২২ বছরের প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে ছাদ কৃষি ও মাঠ পর্যায়ে নিজেকে যুক্ত করেছেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জামাল হোসেন ডালিম।
তিনি জানান, কৃষি কাজের সুযোগ তার জীবনকে করেছে অনেক বেশি অর্থবহ। তার বাড়ির একতলা ভবনটির বয়স চার বছর। ভবনটির ছাদকে দারুণ এক কৃষিক্ষেত্রে পরিণত করেছেন জামাল হোসেন ডালিম। বর্ষা মৌসুমে যেমন প্রতিনিয়ত গুঁড়ি গুঁড়ি মাজারিসহ প্রবল ঝড়ের গতিতে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুড়িচং সদর ইউনিয়নের আশপাশে গ্রামগুলোর কৃষি মাঠগুলো পানিতে থই থই করছে। এমন অবস্থায় কৃষিজ জমিগুলোতে তেমন কোনো ফসল উৎপাদন করা সম্ভব নয় কৃষকদের।
এমন চিন্তা-ভাবনা থেকে তিনি দুই বছর আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে এই বর্ষা সময়ে ছাদের উপরে ইটের কংক্রিট এবং সিমেন্ট ব্যবহার করে দৈর্ঘ্য চার ফিট, প্রস্থ দুই ফিট আকারের বক্স তৈরি করেন। যেন বিল্ডিংয়ের ছাদের কোনো ধরনের ডাম্পিং বা ক্ষতি সাধন না হয়। তারপর তিনি এই বক্সে মাটি, জৈব ও রাসায়নিক সার মিশ্রিত করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখেন। এখানে তিনি সারা বছর শাক-সবজি ফলমূল বিভিন্ন ধরনের ফলাদি আবাদ করেন। এই বছর তিনি লাউ চাষ করে ব্যাপক সারা ফেলেছেন। শীতের সবজি সব কয়টা চাহিদা মিটছে এখান থেকে। ছাদ কৃষিতে লাউয়ের পাশাপাশি তিনি হাইব্রিড জাতের শসা চাষ করেন।
তিনি আরও জানান, এখান থেকে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। আরও আনুমানিক পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের লাউ সবজি রয়েছে। দেশি সবজি গাছের এই সমারোহে অন্যরকম এক জীবনের সন্ধান পেয়েছেন তিনি। এছাড়া এই ছাদটিতে চলছে জৈব কৃষির অনুশীলন। পারিবারিক আমিষের চাহিদা পূরণের জন্য ছাদেই খাঁচায় পালন করা হচ্ছে মুরগি।
জামাল হোসেন ডালিমের স্ত্রী হোসনেয়ারা আক্তারের প্রশান্তির ক্ষেত্র এই ছাদ কৃষি। তিনি বলেন, ছাদ কৃষিতে সাফল্য সম্ভব হয়েছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনের কল্যাণে।

