কোটালীপাড়ায় শত বছরের অনাবাদি জমিতে বোরো আবাদ

0

শত বছরের অনাবাদি জমিতে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বোরো আবাদ করা হয়েছে। অনাবাদি জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শত শত কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এতে অনাবাদি জমি নিয়ে কৃষকেরা নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এ উপজেলায় ২৫হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। এ বছর সেখানে ২৬ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ বেড়েছে। এই ৯৫০ হেক্টর জমিই শত বছর ধরে অনাবাদি ছিল। এ বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও কৃষি অফিসের সহযোগিতায় অনাবাদি এ সকল জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে এই ধান কর্তন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নিটুল রায়, কান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিন্দ্রনাথ রায়, কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুষার মধুসহ এলাকার কৃষকগণ উপস্থিত ছিলেন। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিলেন ‘এক ইঞ্চি জমিও অনবাদি রাখা যাবে না’। তার সেই নির্দেশ পালনে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উন্নয়ন প্রতিনিধি সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারের দিক নির্দেশনায় আমরা অনাবাদি জমিতে আবাদ করার জন্য মাঠে নামি। সে লক্ষ্যে আমরা এ বছর ৯৫০ হেক্টর জমি আবাদের আওতায় আনতে পেরেছি। এ সকল জমি শত বছর ধরে অনাবাদি ছিল বলে কৃষকদের সাথে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি। আগামীতে আমরা বাকি অনাবাদি জমি আবাদে আনতে সক্ষম হবো।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, শত বছরের এই অনাবাদি জমি আবাদে আনার জন্য স্থানীয় কৃষকদের সাথে ৩২টি উদ্বুদ্ধকরণ সভা করা হয়েছিল। অনাবাদি জমি ও খালের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ আগাছা পরিষ্কারে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। এছাড়া কৃষকদেরকে বিনামূল্যে সার বীজ ও শ্রমিক দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছিল। যার ফলে এই ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই ৯৫০ হেক্টর জমির ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারলে গত বছরের চেয়ে এ বছর ৬ হাজার মেট্রিক টন ধান বেশি উৎপাদন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই উপজেলায় আরও ৮১৭ হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে। আমরা আগামীতে এই জমিগুলোও আবাদের আওতায় আনতে পারব।

কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল গ্রামের কৃষক সজল বালা বলেন, বিগত প্রায় ১০০ বছর ধরে আমরা যে জমিতে চাষাবাদ করতে পারিনি, এ বছর সেই জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। এজন্য উপজেলা কৃষি অফিস আমাদেরকে বিনামূল্যে সার বীজ ও শ্রমিক দিয়ে সহযোগিতা করেছে। আমাদের সকল জমিতেই বাম্পার ফলন হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা খুবই আনন্দিত।

কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাড়া দিয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উন্নয়ন প্রতিনিধি সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ গত নভেম্বর মাস থেকে অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আনার জন্য মাঠে কাজ করেছেন। তাই এ উপজেলায় শত বছরের অনাবাদি ৯৫০ হেক্টর জমিতে এ বছরই প্রথম বোরো আবাদ হয়েছে। এ সকল জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় শত শত কৃষকের মুখে এখন হাসি ফুটেছে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here