যারা ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা মেরেছে, পাচার করেছে- দেশে-বিদেশে অবস্থানকারী এসব ঋণ খেলাপির তালিকা হচ্ছে। মেরে দেওয়া টাকা আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে।
সূত্র জানান, কয়েক বছরে দেশের ব্যাংকগুলো থেকে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া ও পাচার করা হয়েছে। এসব ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, কখনোই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই জনগণের টাকা লুটপাট ও পাচারকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে চায় সরকার। তারই অংশ হিসেবে ব্যাংকের টাকা মেরে দেশে-বিদেশে পলাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা মেরে দেশে অবস্থানকারী এবং বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বিচারের মাধ্যমে শাস্তি কার্যকর করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ খেলাপিদের ঋণের পরিমাণ ১৬ হাজার ৫৮৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণের অধিকাংশই মেরে দেওয়া হয়েছে এবং বিদেশে পাচার হয়েছে। ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করে উল্টো দেশে-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছেন তারা। বছরের পর বছর ব্যাংকের খাতায় ঋণ খেলাপি দেখানো হচ্ছে তাদের। অনেক ঋণ খেলাপি নিজেদের ফতুর দেখিয়ে আদালতের কাছে দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করেছেন। আবার ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বড় অংশই পাড়ি জমিয়েছেন দুবাইয়ে। সেখানে গড়ে তুলেছেন আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন ব্যবসা। মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়েছেন অনেকে। বাড়ি-গাড়ি করেছেন থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন করে যাতে দেশ থেকে অর্থ পাচার না হয় সে জন্য এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছেন। আমদানি-রপ্তানির আড়ালে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাচার রোধে কঠোর মনিটরিং করছে বাংলাদেশ ব্যাংকও।