দেশের কৃষি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকার আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বছরের সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ৫০তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় কৃষি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সৌদি আরব থেকে মোট ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের উত্থাপিত দুটি প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
প্রস্তাব অনুযায়ী, সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১২তম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন এবং ১৩তম লটের আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি করা হবে। প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৪১৩ দশমিক ৪৬ মার্কিন ডলার। প্রতি লটে ব্যয় হবে প্রায় ২০৩ কোটি ৯ লাখ টাকা।
এ ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ভারতের প্রতিষ্ঠান এম. এস বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ২১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয় করা হবে। যার প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম ধরা হয়েছে ৩৫১ দশমিক ১১ মার্কিন ডলার।
এছাড়া, সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে নওগাঁয় ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি সার বাফার গুদাম নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। যার ব্যয় হবে প্রায় ৫৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
একই উদ্দেশ্যে বগুড়ায় ২০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি সার বাফার গুদাম নির্মাণের প্রস্তাবও অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
কর্মকর্তারা জানান, এসব আমদানি ও সংরক্ষণ সুবিধা কৃষি মৌসুমে কৃষকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক, সেতু ও স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এলজিইডি বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্প, যার চুক্তিমূল্য ৩৬৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হবে।
এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় একাধিক সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীতে আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং পটুয়াখালীর রাবনাবাদ নদীর ওপর রাবনাবাদ সেতু নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে, পরিবহন ও লজিস্টিকস খাত শক্তিশালী হবে এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সূত্র : বাসস

