সাত দিনের মধ্যে রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমাকে পাসপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মাইকেল চাকমার রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ এই আদেশ দেন বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মাইকেল চাকমার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, সম্প্রতি নিয়ম মেনে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন মাইকেল চাকমা। কিন্তু ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে এসে রিট করেন। রিটে প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আদেশের অনুলিপি পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে মাইকেল চাকমাকে পাসপোর্ট দিতে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারী (মাইকেল চাকমা) প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সরবরাহ করার পরও তাকে পাসপোর্ট দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মৌখিক অস্বীকৃতি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সেই সঙ্গে মাইকেল চাকমাকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দুই দিন পর খোঁজ মেলে মাইকেল চাকমার। এর আগে, পাঁচ বছরের বেশি সময় তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তখন তার সংগঠন ও পরিবারের দাবি ছিল, তাকে গুম করা হয়েছে। ফিরে আসার পর তিনি নিজেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, ৫ বছর ৩ মাস ২৭ দিন তাকে আলোচিত গোপন বন্দিশালা আয়নাঘরে আটক রাখা হয়েছিল।
২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে মাইকেল চাকমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার পরিবার ও দলের অভিযোগ।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমার দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ আগস্ট ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয় মাইকেল চাকমাকে। এরপর ১৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে গুমের অভিযোগ দেন তিনি।