সবার অনুরোধ উপেক্ষা করে পিটার সিডল নিজের সিদ্ধান্তে অটল রইলেন। তিনি আর খেলবেন না প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের বর্ণাঢ্য এক অধ্যায়েরও তাতে সমাপ্তি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৭ টেস্ট খেলা পেসার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন সেই ২০১৯ সালে। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে আগুনে বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে পুড়িয়েই চলছিলেন। সেই পধচলায় একটি অধ্যায়ের ইতি টানলেন কীর্তিমান পেসার। লাল বলের গোলা আর বের হবে না তার হাত থেকে। ২০০৫ সালে মেলবোর্নে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গা গরমের ম্যাচ দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক সিডলের। প্রায় ২০ বছর পর পার্থের ওয়াকায় থামল তার অভিযান। নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ২৩১ ম্যাচে ৭৯২ উইকেট।
২০০৮ সালে মাইকেল ক্যাসপ্রোভিচ বিদায় নিয়েছিলেন ৯৫৯ উইকেট নিয়ে। এরপর সিডলের মতো এত উইকেট পাননি আর কোনো অস্ট্রেলিয়ান পেসার। শেফিল্ড শিল্ড ক্যারিয়ার শেষ করলেন তিনি ৩৩২ উইকেট নিয়ে। এই প্রতিযোগিতার সুদীর্ঘ ইতিহাসে শীর্ষ ১৫ উইকেট শিকারীর একজন তিনি। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি ২৭ বার, চার উইকেট ৩০ দফায়। এর মধ্যে শেষটি ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসেই!
ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও চারটি উইকেট নিয়ে ভিক্টোরিয়াকে ৩৪ রানের দারুণ এক জয় উপহার দিয়ে নিজের বিদায় স্মরণীয় করে রাখেন। শেষ উইকেটটিও এসেছে তার বোলিংয়ে। যেটির মানে ক্যারিয়ারের শেষ বলে উইকেট নিয়েই শেষ করলেন তিনি।
শুধু শেষ ম্যাচের সাত উইকেটই নয়, চলতি মৌসুমে সব সংস্করণেই সিডল ছিলেন উজ্জ্বল। গত দুই মৌসুম ধরেই ভিক্টোরিয়ার হয়ে খেলার পাশাপাশি পেস বোলারদের ‘মেন্টর’ হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। বয়স ৪০ পেরিয়েও এই মৌসুমে তিনি যেন ফিরে গিয়েছিলেন নিজের ক্যারিয়ারের চূড়ায়। এই মৌসুমেও ১৪৮ কিলোমিটার গতিতে বল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। উইকেট নিয়েছেন দেদার।
শেফিল্ড শিল্ডে এবার পাঁচ ম্যাচ খেলে তার উইকেট ২৪টি। বিগ ব্যাশে ওভারপ্রতি আটের কম রান দিয়ে শিকার করেছেন ১২ উইকেট। ঘরোয়া ওয়ানডে কাপে ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ পান এবারই। বয়স ৩৫ ছুঁয়ে ফেললেই যেখানে বেশির ভাগ পেসারের বোলিংয়ে ভাটার টান পড়ে, সিডল সেখানে ৪০ পেরিয়েও ছিলেন দারুণ ক্ষুরধার।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছাড়লেও বিগ ব্যাশে আরও এক মৌসুম খেলবেন সিডল। ভিক্টোরিয়ার বোলিং কোচের দায়িত্বও নিতে পারেন আগামী মৌসুম থেকে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৭ টেস্ট খেলে ২২১ উইকেট নিয়েছেন সিডল। ইনিংসে ৫ উইকেট ছিল ৮ বার। অ্যাশেজে হ্যাটট্রিক করেছেন নিজের জন্মদিনে। টেস্ট বিশেষজ্ঞ পেসার সীমিত ওভারে খুব বেশি সুযোগ পাননি। দেশের হয়ে ওয়ানডে খেলেছেন ২০টি, টি-টোয়েন্টি দুটি।