৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার সুদের হার কমাল ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক

0

প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সুদের হার কমিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রবৃদ্ধির মন্থর গতি নিয়ে উদ্বেগ মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া’র (আরবিআই) বরাত দিয়ে ফরাসি গণমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ঋণ দেওয়ার হার রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৬.২৫ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো গত বছর সুদের হার কমিয়েছিল এবং কিছু এখনও তা অব্যাহত রেখেছে। তবে ভারতের জন্য মূল্যস্ফীতি এক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।

ভারতে খুচরা মূল্যস্ফীতি সম্প্রতি কিছুটা শিথিল হয়েছে। ডিসেম্বরে এটি চার মাসের সর্বনিম্ন ৫.২২ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যমেয়াদি লক্ষ্য ৪ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
এখন মূল্যস্ফীতির চাপ শিথিল হওয়া মানে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

ভারতের অর্থনীতি সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ধীর গতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে, যার কারণ ছিল ধীরগতি উৎপাদন এবং নগর খাতের মন্থর ভোক্তা ব্যয়।

এখন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে, এই আর্থিক বছরে কোভিড-১৯ মহামারীর পর প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে ধীর গতিতে হবে। গত বছর এটি ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছিল।

আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা, তার প্রথম অর্থনৈতিক নীতি পর্যালোচনায় বলেছেন, সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তটি একতরফাভাবে নেওয়া হয়েছে।

মালহোত্রা তার পূর্বসূরি শক্তিকান্ত দাসের তুলনায় কিছুটা কম আক্রমণাত্মক পন্থা গ্রহণ করেছেন। শক্তিকান্ত মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে ২০২২ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২.৫ শতাংশ পয়েন্ট সুদের হার বৃদ্ধি করেছিলেন।

ব্যাংকটি সর্বশেষ ২০২০ সালের মে মাসে সুদের হার কমিয়েছিল।

আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তটি সরকারের বার্ষিক বাজেটে ব্যাপক আয়কর হ্রাসের ঘোষণা দেওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ পর এসেছে। আয়কর হ্রাসের লক্ষ্য ছিল খাদ্য মূল্য বৃদ্ধি এবং দুর্বল মজুরি বৃদ্ধির ফলে ভোগান্তিতে থাকা ভোক্তাদের হাতে আরও টাকা পৌঁছে দেওয়া।

ভারতের অর্থনীতি সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে ৫.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি পর পর সাতটি ত্রৈমাসিকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স এবং বিশ্লেষকদের ৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাসের চেয়েও কম।

এই প্রবৃদ্ধি ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বেশিরভাগ সময়ের দ্রুত প্রবৃদ্ধির তুলনায় কিছুটা ধীর গতির ইঙ্গিত দিলেও এই ফলাফলের মাধ্যমে ভারত বিশ্বের অন্যতম দ্রুতবর্ধমান প্রধান অর্থনীতি হিসেবে অবস্থান করছে।

সূত্র : রয়টার্স।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here