৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি টয়লেট, মানদণ্ড মানছে মাত্র ২৮.৬ শতাংশ

0
৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি টয়লেট, মানদণ্ড মানছে মাত্র ২৮.৬ শতাংশ

বিবিএসের জরিপে জানা গেছে, দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবায় স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনায় বড় ঘাটতি রয়েছে। জরিপ বলছে, দেশের মাত্র ২৮.৬ শতাংশ স্কুলে প্রতি ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি উন্নত টয়লেটের সুবিধা আছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ন্যূনতম মানদণ্ড। এছাড়া মাত্র ৩৩.৯ শতাংশ স্কুল এবং ৪৫.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিরাপদভাবে মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকে। বিবিএস বলছে, এটি পরিবেশ দূষণ ও রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে জরিপ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এসআইডি সচিব আলেয়া আক্তার, এসআইডি অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ সোহেল রানা চৌধুরী, ওআইসি ইউনিসেফ বাংলাদেশ প্রতিনিধি ফারুক আদরিয়ান ডুমন, ফোকাল পয়েন্ট এসডিজি সেলের মো. আলমগীর হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিবিএস জানায়, জরিপে আট বিভাগ ও ৬৪ জেলার সরকারি, বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওয়াটসনের সূত্র অনুসারে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং গত ২৬ জুন থেকে ১৭ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে কাজ করা হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, সুবিধার ধরন, ভৌগোলিক অঞ্চল ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে। বিবিএস বলছে, স্যানিটেশন উন্নয়নে বিনিয়োগ ও শাসন কাঠামোতে জোর দিতে হবে।

জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৯৫.৪ শতাংশ স্কুলে এবং ৮৭.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে উন্নত পানির উৎসে প্রবেশগম্যতা রয়েছে। তবে উন্নত পানির উৎস প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে থাকতে হয়—এই মূল মানদণ্ড পূরণ করেছে মাত্র ৮৬.১ শতাংশ স্কুল এবং ৭০.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উন্নত পানি সুবিধায়ও বড় ঘাটতি রয়েছে। মাত্র ৫৫.৪ শতাংশ স্কুল ও ৪০.৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা নিশ্চিত করতে পেরেছে।

এ ছাড়া মাত্র ১১.১ শতাংশ স্কুল এবং ৩৪.৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এ খাতে বরাদ্দ আছে। দেশে ৯০.৬ শতাংশ স্কুল এবং ৯৮.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অন্তত একটি টয়লেট থাকলেও এর মান ব্যবহারযোগ্যতা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নয়।

হাত ধোয়ার সুবিধাতেও বড় সংকট রয়েছে। জরিপ অনুসারে ৫১.৭ শতাংশ স্কুল ও মাত্র ৫.০ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হাত ধোয়ার মৌলিক মান পূরণ করতে পারে। বিবিএস বলছে, এতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যাহত হয় এবং স্বাস্থ্যবিধির মান কমে যায়। কিশোরীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাও খুবই দুর্বল। দেশের মাত্র ২০.৭ শতাংশ স্কুলে নিরাপদ টয়লেট আছে এবং ৬.৯ শতাংশ স্কুল এমএইচএম সেবা দেয়।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা খাত সবচেয়ে পিছিয়ে। মাত্র ২৫.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মৌলিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারে। ৪১.৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানো হয়, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

এ ছাড়া জরিপে দেখা যায়, গত এক বছরে ২৪.০ শতাংশ স্কুল এবং ১৯.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে। এতে পানি ও স্যানিটেশন অবকাঠামোর ক্ষতি হয়। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতিমূলক জ্ঞানে ঘাটতি রয়েছে। মাত্র ৩৩.৭ শতাংশ স্কুল এবং ৯.৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত।

সূত্র: বিবিএস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here