ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ৬ যুবকের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারের মোবাইল এক্সেসরিজ ব্যবসায়ী কামাল হোসেন চঞ্চল। পরবর্তীতে ভুয়া ভিসা ও টিকিট দিয়ে প্রতারণা করায় খুন করা হয় কামালকে। এ ঘটনার ১৫দিন পরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিরাজগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার এম.এন মোর্শেদ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বেলদা পাইকের গ্রামের মোহাম্মদ আলী হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ রাসেল হোসাইন (২২), বারুইহাটি গ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফ আলীল ছেলে নাসিদুর জামান নসীব (২৩) ও একই গ্রামের জিন্নাত আলীল ছেলে কফিলুর রহমান কফিল (২৩)।
হত্যাকাণ্ডের শিকার কামাল হোসেন চঞ্চল (৩০) বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলছিড়া ইউনিয়নের বোরাদি গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে। তিনি ঢাকার রায়ের বাজারে নিজ বাসায় থাকতেন এবং মোবাইল এক্সেসরিজের ব্যবসা করতেন।
পিবিআই পুলিশ সুপার এম.এন মোর্শেদ জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের নিঝুড়ি গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় কামাল হোসেন চঞ্চলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন কামাল হোসেনের ভাই আসাদুজ্জামান রঞ্জু বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পিবিআই জেলা টিম তদন্ত শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করে।
আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাদ দিয়ে তিনি আরও জানান, গ্রেফতার ৩ জনসহ মোট ৬ জনকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা নেন কামাল হোসেন চঞ্চল। পরবর্তীতে কামাল তাদের ইতালির ভুয়া ভিসা ও টিকেট দিয়ে প্রতারণা করেন। পরে আসামিরা বুঝতে পারে কামাল তাদের ইতালিতে পাঠাবেন না। এজন্য তারা কামালকে ঢাকা থেকে অপহরণ করে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে আটকে রেখে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেন।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা কামালকে ধানমন্ডির কেএফসি রেস্টুরেন্ট থেকে অপহরণ করে। গাড়ির ভেতরে নিয়ে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করলে কামালের মৃত্যু হয়। পরে আসামিরা কামালের লাশ সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের নিঝুড়ি গ্রামের একরামুল হকের ধানক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতার ৩ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।