২০২৯ সাল থেকে ইউটিউবে দেখা যাবে অস্কার অনুষ্ঠান

0
২০২৯ সাল থেকে ইউটিউবে দেখা যাবে অস্কার অনুষ্ঠান

আগামী বছর থেকে টেলিভিশন চ্যানেল এবিসির পর্দার পরিবর্তে সরাসরি ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে অস্কার বা একাডেমি অ্যাওয়ার্ডস দেখা যাবে। ফলে দীর্ঘ ৫০ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো এবিসি নেটওয়ার্ক এই বিখ্যাত চলচ্চিত্র পুরষ্কার অনুষ্ঠান সম্প্রচারের অধিকার হারাতে যাচ্ছে।

স্থানীয় সময় বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দ্য একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইউটিউবের সঙ্গে তাদের এই ‘গ্লোবাল এক্সক্লুসিভ’ এর ২০৩৩ সাল পর্যন্ত চুক্তি হয়েছে।  এই সময়ে বিশ্বজুড়ে অস্কার প্রচারের একক স্বত্ব থাকবে ইউটিউবের হাতে।

এত দিন অস্কার সম্প্রচারের স্বত্ব ছিল ডিজনি-মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেল এবিসির হাতে। তবে এখনই ইউটিউবে যাচ্ছে না অস্কার। ২০২৮ সাল পর্যন্ত এবিসিতেই এই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান দেখা যাবে। ২০২৮ সালে অস্কারের শতবর্ষপূর্তির আয়োজনটি সম্প্রচারের মাধ্যমেই বিদায় নেবে এবিসি।

প্রথাগত টেলিভিশনের চেয়ে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর (যেমন নেটফ্লিক্স, ইউটিউব) প্রভাব যে বিনোদনজগতে কতটা বাড়ছে, এই চুক্তি তারই প্রমাণ। ওয়াল্ট ডিজনির মালিকানাধীন এবিসি ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্ক ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতি বছর অস্কার টেলিভিশনে প্রচার করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চলচ্চিত্র শিল্পের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত এই অনুষ্ঠানের রেটিং হ্রাস পেয়েছে, কারণ দর্শকরা অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে চলে যাচ্ছে।

মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের অস্কারও প্রথমবারের মতো ডিজনির মালিকানাধীন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হুলুতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল। প্রযুক্তিগত সমস্যা সত্ত্বেও – দুটি প্রধান পুরষ্কার বিভাগ, সেরা অভিনেত্রী এবং সেরা ছবি ঘোষণার আগে স্ট্রিম বন্ধ করে দেওয়া সহ – অনুষ্ঠানটি পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন দর্শক এনেছে।

এ বিষয়ে ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নীল মোহন বলেন, অস্কার আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের নানা প্রান্তের দর্শকের কাছে শিল্প ও বিনোদনের এই উদ্‌যাপনকে পৌঁছে দিতে একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা আনন্দিত। এটি নতুন প্রজন্মকে চলচ্চিত্রের প্রতি আরও আগ্রহী করবে।

তবে ইউটিউবের হাতে অস্কারের দায়িত্ব যাওয়া নিয়ে হলিউডে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ইউটিউব বা স্ট্রিমিং সাইটগুলো প্রথাগত সিনেমার গল্পের ধরন বদলে দিচ্ছে। 

চিত্রনাট্যকার ড্যানিয়েল কুনকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, অস্কার সম্প্রচারে ইউটিউবের যুক্ত হওয়া মানে—যে আপনাকে মেরে ফেলতে চাইছে, তার সঙ্গেই হাত মেলানো।’

অস্কার মূলত সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোকেই উদ্‌যাপন করে। অথচ এখন দর্শকেরা হলবিমুখ হয়ে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের দিকে ঝুঁকছেন। উদাহরণ হিসেবে চলতি বছরের অস্কারে সেরা ছবি ‘আনোরা’র কথা বলা যায়। কান চলচ্চিত্র উৎসব ও সিনেমা হল ঘুরে ছবিটি অল্প সময়ের মধ্যেই হুলু-তে (স্ট্রিমিং সাইট) মুক্তি পেয়েছিল।

অন্যদিকে এবিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে অস্কারের গর্বিত সঙ্গী হতে পেরে তারা আনন্দিত। আগামী তিনটি আসর (২০২৬-২০২৮) এবং শতবর্ষ উদ্‌যাপনের অপেক্ষায় আছে তারা। একই সঙ্গে একাডেমির ভবিষ্যৎ সাফল্যের জন্যও শুভকামনা জানিয়েছে চ্যানেলটি।

সূত্র: আলজাজিরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here