১৯ দেশের গ্রিন কার্ডধারীদের নথি ফের খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র

0
১৯ দেশের গ্রিন কার্ডধারীদের নথি ফের খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্র

আফগানিস্তানসহ মোট ১৯টি দেশের গ্রিন কার্ডধারীদের নথি পুনরায় কঠোরভাবে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, অভিবাসন নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে এই নাগরিকদের দেওয়া আগের গ্রিন কার্ড ফাইলগুলো নতুন করে খতিয়ে দেখা হবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, ওয়াশিংটনে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে গুলি করে হত্যার সাম্প্রতিক ঘটনার পরই এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্দিষ্ট দেশগুলোর অভিবাসীদের অতীত তথ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকি আবারও যাচাই করে দেখা হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।

হোয়াইট হাউসের কাছে হওয়া এই বন্দুক হামলায় ইতোমধ্যেই আহত এক ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মারা গেছেন। আর আহত অন্য সদস্য ‘বাঁচার জন্য লড়াই করছেন’ বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এমন অবস্থায় মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবা (ইউএসসিআইএস)–এর প্রধান জোসেফ এডলো জানান, ‘উদ্বেগজনক দেশগুলো থেকে আসা প্রত্যেক বিদেশির গ্রিন কার্ড সম্পূর্ণ ও কঠোরভাবে পুনরায় পরীক্ষা করতে’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

বিবিসি কোন কোন দেশের কথা জানতে চাইলে সংস্থাটি হোয়াইট হাউসের জুন মাসের এক ঘোষণার দিকে ইঙ্গিত করে। সেই ঘোষণায় আফগানিস্তান, কিউবা, হাইতি, ইরান, সোমালিয়া ও ভেনেজুয়েলার নাম ছিল। মূলত গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এক আফগান নাগরিক দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে গুলি করে গুরুতর আহত করে এবং এরপরই এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হামলার সেই ঘটনার পর রহমনুল্লাহ লাখানওয়াল নামে এক আফগান নাগরিককে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয়। ২৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ২০২১ সালে বিশেষ এক অভিবাসন কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরে আফগান নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ওই অভিবাসন কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

অবশ্য এডলোর বৃহস্পতিবারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেওয়া পোস্টে এই গ্রিন কার্ড পুনরায় পর্যালোচনার প্রসঙ্গ থাকলেও হামলার কথা সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘এই দেশ ও এর জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আগের সরকারের বেপরোয়া পুনর্বাসন নীতির খেসারত আমেরিকানদের আর বহন করতে হবে না।’

অবশ্য গ্রিন কার্ড পুনরায় পরীক্ষার প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, সে বিষয়ে আর কোনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

ইউএসসিআইএস গত জুন মাসের যে ঘোষণার কথা উল্লেখ করেছে, সেখানে বলা হয়েছিল— বিদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সীমিত করার লক্ষ্য হলো ‘বিদেশি সন্ত্রাসী ও অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তা হুমকি’ থেকে দেশকে রক্ষা করা। ঘোষণায় আরও বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ এবং ব্যবসা, শিক্ষা ও পর্যটন ভিসাধারীদের অতিরিক্ত সময় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানও কোনো দেশকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কারণ হতে পারে।

ঘোষণায় বলা হয়, ‘তালেবান আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করে। দেশটিতে বৈধ পাসপোর্ট বা নাগরিক সংক্রান্ত কাগজপত্র ইস্যুর সক্ষমতা ও সহায়ক কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ নেই এবং যথাযথ স্ক্রিনিং ও যাচাই–বাছাই ব্যবস্থাও নেই।’

অন্যান্য যেসব দেশের গ্রিন কার্ডধারীরা এই পুনরীক্ষণের আওতায় আসবেন তাদের মধ্যে মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও লিবিয়াও রয়েছে।

এদিকে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদস্যদের ওপর হামলার পর ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘এই হামলা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে। আগের প্রশাসন বিশ্বজুড়ে অজানা ও যাচাই–বাছাইহীন ২ কোটি মানুষকে দেশে ঢুকতে দিয়েছে। এ ধরনের ঝুঁকি কোনো দেশই মেনে নিতে পারে না।’

এর আগে গত সপ্তাহেই ইউএসসিআইএস ঘোষণা করেছিল, বাইডেন প্রশাসনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাওয়া সব শরণার্থীর স্ট্যাটাস পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে। আর বুধবার যুক্তরাষ্ট্র আফগানদের সব ধরনের অভিবাসন আবেদন গ্রহণ স্থগিত করে।

সূত্র: বিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here