ঘটনাটি ভারতের। ১৬ বছর আগে দেশটির মুম্বাইয়ে মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করা হয় এক বোবা ও বধির তরুণীকে। এত দিন পর সেই ঘটনায় ধর্ষককে চিনিয়ে দিলেন ভুক্তভোগী। তার অভিযোগের ভিত্তিতে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করা হয়েছে ধর্ষককে।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত যুবক অতীতে আরও বেশ কয়েকজনকে একইভাবে যৌন নির্যাতন করেছেন। সব অভিযোগের তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে ২০০৯ সালে। ভুক্তভোগী সে সময় নাবালিকা ছিলেন। মাদক খাইয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে তাকে হুমকিও দিতে শুরু করেন ওই যুবক। ভয়ে এত দিন থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি নির্যাতিতা। ভুক্তভোগীর আরও দাবি, তিনি একা নন, ওই যুবক অতীতে একের পর এক নারীকে যৌন নির্যাতন করেছেন। তাদের প্রত্যেককে তিনি নিয়মিত হুমকিও দিতেন। সম্প্রতি ওই যুবকের দ্বারা নির্যাতিতা এক নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তারপরই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নির্যাতিতা তরুণী।
ভুক্তভোগীর তথ্যানুযায়ী, এক বান্ধবীর কথায় ২০০৯ সালের জুলাই মাসে মুম্বাইয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বান্ধবীর সান্তাক্রুজের বাড়িতেই উঠেছিলেন ওই তরুণী। কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তও সেখানে আসেন। অভিযোগ, তরুণীকে মাদক মেশানো খাবার এবং নরম পানীয় খেতে দেন দু’জনে। খাবার খেয়ে তরুণী সংজ্ঞা হারালে অভিযুক্ত তাকে ধর্ষণ করেন। চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রথমে ভিডিও কলে ২০০৯ সালে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার কথা ইশারায় বন্ধুদের জানান বোবা ও বধির ওই তরুণী। সব জানার পর বন্ধুরাই তাকে থানায় নিয়ে যান। তরুণীর স্বামীও সঙ্গে যান। এ সময়ে ঠাণে বধির সমিতির সভাপতি বৈভব ঘাইসিস, কর্মী মুহাম্মদ ফারহান খান, সাংকেতিক ভাষা জানেন এমন দোভাষী মধু কেনি-সহ আরও কয়েকজন তরুণীর পাশে দাঁড়ান। ১৩ ডিসেম্বর কুরার থানার পুলিশের কাছে গিয়ে দোভাষীর মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত যুবককে পালঘর জেলার ভিরার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত বেছে বেছে বোবা ও বধির নারীদেরই নিশানা করতেন। তারপর তাদের একইভাবে মাদক খাইয়ে যৌন নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা জানিয়েছেন, অভিযুক্তের কাছ থেকে বেশ কয়েকজন নারীর অন্তরঙ্গ ভিডিও উদ্ধার হয়েছে। সেই ভিডিও দেখিয়ে তাদের হুমকি দিয়ে অর্থ, স্বর্ণ আদায় করতেন ওই যুবক।
ওই পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাতজন নারীকে যৌন নির্যাতনের খবর পেয়েছি। তবে সংখ্যাটি ২৪ জনের বেশিও হতে পারে।’’
অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানোর পর বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস

