হ্রদে ভাসছে নিথর গোলাপি হাতি শাবক, তিন দিন ধরে পাহারায় শোকগ্রস্ত মা!

0
হ্রদে ভাসছে নিথর গোলাপি হাতি শাবক, তিন দিন ধরে পাহারায় শোকগ্রস্ত মা!

টানা তিনদিন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে একটি মা হাতি। এক মুহূর্তের জন্যও নিজের জায়গা থেকে সরেনি। খায়নি কোন খাবার। শুকিয়ে গেছে মুখ। চোখে-মুখে চিন্তার ভাঁজ। সামনে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে ভেসে আছে একমাত্র সন্তান গোলাপি হাতির নিথর দেহ। হয়তো মানুষ হলে চিৎকার করে কেঁদে বুক ভাসাতো। কিন্তু বন্য বোবা প্রাণী নিঃশব্দ! তাদের শোকের ভাষাও তাই ভিন্ন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটির বরকল উপজেলার ১নং সুবলং ইউনিয়নের বরুনাছড়ি এলাকায়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জন্ম নেয় রাঙামাটির একমাত্র গোলাপি হাতি। যা গত জুন মাসে খবরটি সামনে এলে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এ গোলাপি হাতির জন্মই ছিলো প্রথম। যা ছিল সবার জন্য একটি সৌভাগের মতো। টানা ১০ মাস পর হঠাৎ অজ্ঞাত কারণে মারা গেলো রাঙামাটির একমাত্র গোলাপি হাতিটি। কি কারণে মারা গেছে সে হাতি শাবকটি তার কোন সঠিক তথ্যও দিতে পারেনি উত্তর বনবিভাগ।

রাঙামাটি বরকলের হাতি সুরক্ষা দলের সদস্য মো. লিটন হোসেন জানায়, কাপ্তাই হ্রদে ভাসছিল গোলাপি হাতির মরদেহ। দেখে পানিতে লাফিয়ে পড়ে মা হাতিটি। তার লম্বা শুঁড় দিয়ে কোন রকম কাপ্তাই হ্রদ পাড়ে টেনে আনে প্রিয় শাবকটির মরদেহ। কিন্তু পানি থেকে উপরে তোলার তার সাধ্য নেই। তাই হ্রদের পাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের সন্তানের মরদেহ পাহারা দিচ্ছেন মা হাতিটি। এক মুহুূতের জন্য সরেনি হাতিটি। কোন রকম বসতে দেখেনি স্থানীয়রাও। তাই হাতির ওপর নজর রেখেছ পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সদস্য ও হাতি সুরক্ষা দলের সদস্যরাও। মা হাতিটি সরে গেলেই উদ্ধার করা হবে মৃত হাতির দেহটি। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের সুবলং রেঞ্জের কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানায়, মা হাতি সামনে থেকে বাচ্চাটা উদ্ধার করা সম্ভব না। কারণ মা হাতি পাগল হয়ে পুরো গ্রাম ধ্বংস্তুপে পরিণত করবে। তাই আমরা অপেক্ষা করছি। মা হাতিটি সরে গেলে শাবকটির দেহ উদ্ধার করে মাটি চাপা দেওয়া হবে। 

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮জুন গোলাপি হাতিটি শাবকটি রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ সাঁতরে পার হওয়ার সময় ভিডিও করেন স্থানীয় এক যুবক। পরে এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here