দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এনডিটিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি সাফ জানিয়েছেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে মুর্শিদাবাদে তিনি ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণ করবেনই।
১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ টেনে হুমায়ুন দাবি করেন, অযোধ্যায় যা সম্ভব হয়েছে মুর্শিদাবাদে তা হবে না। তার মতে, এই জেলায় কারও সাহস নেই এই মসজিদের গায়ে হাত দেওয়ার। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ২০ কোটি রুপি এবং বিপুল পরিমাণ নির্মাণ সামগ্রী জোগাড় করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই এই মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হবে এবং তিনি জানিয়েছেন যে তার বাড়ির একটি ঘরে এই কাজের জন্য সংগৃহীত সমস্ত অর্থ গচ্ছিত রাখা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর দূরত্বের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হুমায়ুন কবীর অভিযোগ করেন, বর্তমান তৃণমূল আর আগের মতো নেই। মমতা এখন সাধারণ মানুষের থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছেন এবং দল এখন সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাক-এর নির্দেশে চলছে। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, প্রশান্ত কিশোর বা প্রতীক জৈনের মতো নেপথ্যের কুশীলবরাই ঠিক করে দিচ্ছেন কে দলে থাকবেন আর কে থাকবেন না। তার মতে, দলের পুরনো নেতৃত্বকে কোণঠাসা করে পরামর্শদাতাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার কারণেই তৃণমূলের এই অবনতি। মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এখন আর কারও কথা শোনেন না, যার ফলে তার মতো দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মীদের বহিষ্কৃত হতে হচ্ছে।
তবে বহিষ্কারের পর দমে না গিয়ে আগামী ২২শে ডিসেম্বর বহরমপুরে এক বিশাল জনসভার ডাক দিয়েছেন হুমায়ুন কবীর। সেই সভা থেকেই তিনি নিজের নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন। তার লক্ষ্য হলো আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ১৩৫টি আসনে প্রার্থী দেওয়া, যাতে তৃণমূল বা বিজেপি কোনো পক্ষই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তার এই সমস্ত দাবিকে গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং দাবি করা হয়েছে রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক থাকতেই তিনি এসব ভিত্তিহীন মন্তব্য করছেন।

