আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত রয়েছে এমন কিছু খাবার, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অনুষদ সদস্য ও পুষ্টি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. উমা নাইডুর মতে, মানুষের বয়স যা-ই হোক না কেন, তার খাবার তার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। উমা নাইডুর গবেষণা অনুযায়ী নিম্নোক্ত খাবারগুলোর সঙ্গে স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়:
১. অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার: খাবারের অতিরিক্ত চিনি মানুষের স্মৃতিহ্রাস ও ডিমেনশিয়া রোগের শঙ্কা বাড়াতে পারে। কারণ চিনি দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ বাড়ায়। যা রক্তচাপ, ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স ও প্রদাহ বৃদ্ধি করে মগজের কোষ ও রক্তবাহী ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে স্মৃতি ও স্নায়ুতন্ত্রের কাজ ঝুঁকিতে পড়তে পারে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, নারীদের প্রতিদিন ২৫ গ্রামের বেশি ও পুরুষদের ৩৬ গ্রামের বেশি চিনি গ্রহণ করা উচিত নয়।
২. ভাজা খাবার: তেলে ভাজা খাবারে সাধারণত স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্সফ্যাট বেশি থাকে। যা প্রদাহ বাড়িয়ে মেমোরি ও ব্রেইন‑সেলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভাজা খাবার গ্রহণ কমিয়ে, দৈনিক খাবারের পরিবর্তে সাপ্তাহিক বা মাসিক খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যা জ্ঞানীয় কার্যকারিতা রক্ষা করে ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখে। পরিবর্তে বেকিং, স্টিমিং বা এয়ার-ফ্রাইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
৩. রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট: সাদা রুটি, পাস্তা ও আলু জাতীয় পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা চিনির মতোই বাড়িয়ে দেয়। যা বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। উচ্চ গ্লাইসেমিক খাবার প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও সৃষ্টি করতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিউরন ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে।
৪. অ্যালকোহল: অতিরিক্ত মদপান মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ব্যাহত করে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত মদ্যপানকারীদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেশি। অ্যালকোহল ঘুম, পুষ্টির শোষণ ও নিউরোট্রান্সমিটার ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। যা স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৫. প্রসেস করা মাংসজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত মাংসে থাকা প্রিজারভেটিভ পাকস্থলির ব্যাকটেরিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যা মানুষের মেজাজ ও মস্তিষ্কের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিছু গবেষণায় নাইট্রেট বিষণ্ণতা ও বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার সঙ্গেও যুক্ত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
বিডি-প্রতিদনি/এমই

