ভারতের সংসদে ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের জায়গায় জায়গায় সহিংসতা এবং তাতে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় ফের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতা কালীঘাট মন্দিরের নবরূপ, নবনির্মিত কালীঘাট স্কাইওয়াক ও হকার্স কর্নারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ধর্ম নিয়ে অধর্মের খেলা খেলতে নেই। ধর্ম মানে শ্রদ্ধা, মানবিকতা, ভালোবাসা, শান্তি ও সম্প্রীতি। ধর্ম মানে একতা। মানুষকে ভালোবাসার থেকে বড় ধর্ম আর কিছু হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা যখন জন্মাই, তখন একা। আবার যখন চলে যাই তখনও একা যেতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কীসের লড়াই? কীসের দাঙ্গা, যুদ্ধ, অশান্তি? ভালোবাসলে সব কিছু জয় করা যায়। কিন্তু নিজেকে আলাদা করে রাখলে জয় করা যায় না।
সম্প্রতি ভারতের সংসদে মুসলিমদের স্বার্থবিরোধী ওয়াকফ বিল পাস হয়েছে। পরে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সেই আইনের বিরোধিতায় গোটা ভারতেই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে মুসলিমরা। গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতেও পথে নেমেছে তারা। সহিংসতায় রূপ নেওয়া এ বিক্ষোভের জেরে তিনজন নিহত হয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান মমতা।
তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করার অধিকার সকলের আছে। কিন্তু দয়া করে এ, বি, সি, ডি- যেই হোক না কেন, আইন কখনো হাতে তুলে নেবেন না। কারণ আইনের রক্ষক আছে। কেউ কেউ হয়তো প্ররোচনা দেবে, কিন্তু প্ররোচনার সময় যে মাথা ঠান্ডা রাখে, তারই আসল জয় হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যদি কারোর ওপর আঘাত আসে, সে বঞ্চিত, শোষিত বা যেকোনো ধর্মের মানুষই হোক না কেন, আমরা তাদের পাশে দাঁড়াই। আপনারা সবাই শান্তির বজায় রাখুন, কারণ বাংলার মাটি শান্তির মাটি, এ মাটি স্বর্ণের চেয়েও খাঁটি।
বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি সব অনুষ্ঠানে যাই। আমি অন্য কোনো একটি ধর্মের অনুষ্ঠানে গেলে আমার বিরুদ্ধে লেখা হয়, এমনকি আমার পদবিও বদলে দেওয়া হয়। এটা কারা করে?