চীনের সফটওয়্যার প্রকৌশলীরা “মানুস” নামে একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এজেন্ট তৈরি করেছেন, যা মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই বিভিন্ন বাস্তব কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম। অন্যান্য প্রচলিত এআই চ্যাটবটের মতো নয়, মানুস স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং নির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা ছাড়াই নিজে থেকেই কাজ শুরু করতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “মানুস” নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি মনিকা নামের একটি স্টার্টআপ পরীক্ষামূলকভাবে এআই এজেন্টটি উন্মুক্ত করেছে।
জানা গেছে, মানুস যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম শুধু তা–ই নয়, এআই এজেন্টটি কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি সহজেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরন অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। এরই মধ্যে অনলাইনে এআই এজেন্টটির একাধিক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশের পরপরই ভিডিওগুলো প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাজে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের দাবি, মানুস বিশ্বের প্রথম স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এজেন্ট। কারণ, এটি বিভিন্ন বিষয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা ও পরিকল্পনা করতে পারে। পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ ফলাফলও সরবরাহ করে থাকে। ফলে এআই এজন্টটির মাধ্যমে সহজেই ভ্রমণের পরিকল্পনা প্রণয়ন, শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ, শিক্ষকদের জন্য ইন্টারঅ্যাকটিভ শিক্ষাক্রম তৈরি এবং বিভিন্ন বিমা নীতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা সম্ভব।
ম্যানাস এআই এজেন্টের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মনিকা জানিয়েছে, মানুস এআই এজেন্ট বিভিন্ন জটিল কাজ করতে পারে। ব্যবহারকারীর পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেকে ক্রমাগত উন্নত করতে সক্ষম এআই এজেন্টটি এরই মধ্যে জিআইএআইএ বেঞ্চমার্কে ওপেনএআইয়ের ডিপরিসার্চের তুলনায় ভালো ফলাফল প্রদর্শন করেছে।
২০২৩ সালে চীন “ডিপসিক” নামে একটি এআই মডেল প্রকাশ করেছিল, যা ওপেনএআই-এর জিপিটি-৪-এর প্রতিযোগী হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু “মানুস” এই ধাপটি ছাড়িয়ে গেছে, কারণ এটি শুধু ভাষার মডেল নয়, বরং সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এআই এজেন্ট, যা স্বাধীনভাবে বাস্তব কাজ করতে পারে।
এটি পশ্চিমা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এতদিন পর্যন্ত সিলিকন ভ্যালির কোম্পানিগুলো মনে করত যে, এআই উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাদের একচেটিয়া আধিপত্য থাকবে। কিন্তু মানুসের উদ্ভাবন এই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে এবং চীনের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি তুলে ধরেছে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস