খিরাই নদী কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন দিয়ে চাঁদপুরের মতলব হয়ে মেঘনায় পড়েছে। ১০ বছর আগেও এ নদী ছিল খরস্রোতা। নদীতে নৌকা ও ট্রলার চলত। দেশি মাছের উৎস ছিল। দুই পাশের ২০ হাজার বিঘার বেশি জমিতে এ নদীর পানি দিয়ে সেচ দেওয়া হতো। সে খিরাই এখন মরা খাল। পলিতে নদী ভরাট হয়ে গেছে, কচুরিপানা বিভিন্ন স্থানে জমাট বেঁধে আছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কুমিল্লার দাউদকান্দির মোল্লাকান্দিতে ধনাগোদা নদী থেকে এর উৎপত্তি হয়েছে। এটি গোয়ালমারী বাজার হয়ে জুরানপুর, কালা সাদারদিয়া, চরগোয়ালী, দুর্গাপুর, পশ্চিম নোয়াদ্দা, নৈয়ার, কাদিয়ারভাঙ্গা, নশিপুর, মারুকা, চৌধুরীপাড়া, নারায়ণদিয়া হয়ে চাঁদপুরের মতলব হয়ে মেঘনা নদীতে পড়েছে। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে নদীটি খনন করা হয়।
স্থানীয় নৈয়ার সায়েন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন শিকদার ও বীরভাগ গোয়ালীর বাসিন্দা পল্লীচিকিৎসক মাহবুব আলম বলেন, ‘দাউদকান্দি থেকে লোকজন নদীতে নৌকায় এ এলাকায় আসত। এখন নদীর গতিপ্রবাহ নেই। একসময় দেশি মাছে নদী খলবলিয়ে উঠত, এখন মাছ নেই বললেই চলে। পানি সংকটে নদীর দুই পাশের জমির প্রয়োজনীয় সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। এটি আবারও খনন করা প্রয়োজন।’
দাউদকান্দির বাসিন্দা কৃষি ও পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম নদীর নাম জানে না। তাদের নদীর গুরুত্ব বোঝাতে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না। খিরাই নদী পরিদর্শন করেছি। এটি খনন হলে ২০ হাজারের বেশি বিঘা জমি ফলফসলে ভরে উঠবে।’
উপজেলা কৃষি অফিসার নিগার সুলতানা বলেন, ‘খিরাই নদী নিয়ে সম্প্রতি উপজেলা সমন্বয় সভায় কথা বলেছি। এ বিষয়ে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করব।’ দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আরাফাতুল আলম বলেন, ‘এখানে আমি নতুন যোগদান করেছি। আমার বাসভবনের নাম খিরাই। জানতে পারলাম এটি একটি নদীর নাম। নদী পরিদর্শন করব। এটি খননের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ফোরামে কথা বলব।’