সার্ক অঞ্চলে বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগানোর তাগিদ

0

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ক এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিশাল এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়টি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও জোরদারে সদস্য দেশগুলোকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। 

বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সার্ক এর গুরুত্ব শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে মালদ্বীপের প্রাক্তন মন্ত্রী মরিয়ম শাকিলা, সার্ক সিসিআই (শ্রীলঙ্কা) এর প্রাক্তন সভাপতি রুয়ান এদিরিঙ্গে, সার্ক সিসিআই (নেপাল) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নেপাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফএনসিসিআই) সাবেক সভাপতি চন্ডি রাজ ঢাকাল, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় বসু, সার্ক সিসিআই (পাকিস্তান) এর সহ-সভাপতি আঞ্জুম নিসার, আফগানিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য জানাকা সিদ্দিকী, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি, পরিচালকবৃন্দসহ বাংলাদেশ ও সার্কভুক্ত দেশসমুহের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এতে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি প্রধান আকর্ষণ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার অনন্য সুযোগ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর। এই অঞ্চলের তরুণদের দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরিত করতে পারলে সেটি এই অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে। দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল এই ভোক্তা বাজার আমাদের জন্য এক ধরনের আশীর্বাদ। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা এখন সময়ের দাবি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, নতুন বাজারে প্রবেশ, পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, আন্তঃসীমান্ত ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ বাণিজ্যের বাধা সমুহ দূর করার মাধ্যমে সার্কের বাণিজ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে কাজ করতে পারে বেসরকারি খাত। সার্ক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বিজনেস টু বিজনেস মিটিং পারস্পরিক বাণিজ্য জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্ক স্থাপন করা গেলে এই অঞ্চল হতে পারে বিশ্বের অন্যতম গতিশীল ও উদীয়মান শক্তি। এই লক্ষ্যে শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এবং সংস্থাগুলোকে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

সার্ক সিসিআই (শ্রীলঙ্কা) এর প্রাক্তন সভাপতি রুয়ান এদিরিঙ্গে বলেন, সার্কভুক্ত দেশ সমুহের বিপুল জনশক্তি, বিশাল বাজার, অর্থ এবং পর্যাপ্ত খনিজ সম্পদ ও কাঁচামাল রয়েছে। অথচ এসব সম্পদকে আমরা এখনও কাজে লাগাতে পারিনি। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সার্ক চেম্বারের সদস্যদের নিজ নিজ দেশের ব্যবসায়ী নেতৃত্ব এবং সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাগুলো দূর করতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ সময় সার্ক সিসিআই (পাকিস্তান) এর সহ-সভাপতি আঞ্জুম নিসার বলেন, অন্যান্য আঞ্চলিক জোটগুলো তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে জোড়ালোভাবে কাজ করছে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমরা এখনও সার্কের মতো এত সম্ভাবনাময় একটি জোটকে কাজে লাগাতে পারিনি। পর্যটন, কৃষি, মৎস্য, শিল্প, মানব উন্নয়নসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে আমাদের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই অঞ্চলে বাণিজ্যের সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে নিজ নিজ দেশের সরকারকে আরও তৎপর করতে কাজ করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here