সারাদেশে দ্রুতগতিতে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ করছে সরকার: আইসিটি সচিব

0
সারাদেশে দ্রুতগতিতে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ করছে সরকার: আইসিটি সচিব

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেছেন, সরকার দেশে দ্রুতগতিতে ডিজিটাল সেবা বিস্তার করছে এবং এখন অগ্রাধিকার হওয়া উচিত প্রতিটি নতুন সেবা শুরু থেকেই সবার জন্য প্রবেশযোগ্যভাবে তৈরি করা।

আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিডা অডিটোরিয়ামে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ আয়োজিত “ইনোভেশন টু ইনক্লুশন ইন দ্য ডিজিটাল এইজ” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সেমিনারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বাংলাদেশের দ্রুত সম্প্রসারিত ডিজিটাল সেবাসমূহকে সম্পূর্ণ প্রবেশযোগ্য করতে সুস্পষ্ট ও সময়বদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান বলেন, প্রবেশযোগ্যতা মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত কারণ যারা সহজ একটি অনলাইন কাজও প্রবেশযোগ্যতার জন্য নিজেরা সম্পন্ন করতে পারেন না, তারা প্রায়ই নিজেদের জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন ও অবহেলিত মনে করেন। 

এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোহা. আব্দুর রফিক সমাপনী বক্তব্যে বলেন, একক কোনো প্রতিষ্ঠান একা ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে পারবে না। বাস্তবভিত্তিক ও ন্যায্য সমাধান তখনই আসে, যখন নীতিনির্ধারক, প্রযুক্তিবিদ ও প্রতিবন্ধী অধিকারকর্মীরা একসঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করেন। 

সেমিনারে আলোচিত নীতি-প্রস্তাবে আগামী পাঁচ বছরে আওতাভুক্ত বহু উদ্যোগের কথা তুলে ধরা হয়। প্রথম বছরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সাশ্রয়ী ইন্টারনেট প্যাকেজ, সব সরকারি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অ্যাক্সেসিবিলিটি অডিট, ডিজাইন গাইডলাইন কঠোরভাবে প্রয়োগ, প্রতিবন্ধী নারী ও তরুণদের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ জোরদারের প্রস্তাব করা হয়।

এছাড়া ডেভেলপার ও সেবা প্রদানকারীদের জন্য বিশেষায়িত অ্যাক্সেসিবিলিটি প্রশিক্ষণ এবং ডিজিটাল স্কিলস ট্রেনিং হাব প্রতিষ্ঠার সুপারিশও উঠে আসে।

দ্বিতীয়-তৃতীয় বছরের লক্ষ্য- সরকারি ভাতা ও ভর্তুকিতে দূরবর্তী পরিচয় যাচাইকরণ ব্যবস্থা, ন্যাশনাল ডিজেবিলিটি হেল্পলাইন, ডিজিটাল ব্যাংকিংসহ আর্থিক সেবার প্রবেশযোগ্যতা বৃদ্ধি, সহায়ক প্রযুক্তির ব্যবহার সম্প্রসারণ এবং দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়।

শেষ ধাপে আন্তর্জাতিক মানসম্মত ডিজিটাল অ্যাক্সেসিবিলিটি অ্যাক্ট প্রণয়ন, আইসিটি বিভাগের অধীনে ওয়েব অ্যাক্সেসিবিলিটি মনিটরিং অথরিটি গঠন এবং মুক্তপাঠ, নাইসসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্ল্যাটফর্মসমূহে পূর্ণ প্রবেশযোগ্যতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জরুরি বার্তাসহ সব সরকারি তথ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সহজবোধ্য ও ব্যবহারযোগ্য করার সুপারিশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে এটুআই ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ “ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণ: বাংলাদেশের ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশযোগ্যতা উন্নয়ন” শীর্ষক নতুন গবেষণা ও পলিসি ব্রিফ উপস্থাপন করে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়- দেশে ইতোমধ্যে এক হাজারের বেশি ই-সেবা চালু এবং প্রায় ৩৩ হাজার সরকারি ওয়েবসাইট একীভূত করা হলেও বহু প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বাস্তবে এসব সেবা ব্যবহারে এখনও বাধার সম্মুখীন হন।

সেমিনারে আইসিটি বিভাগ, এটুআই, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, সমাজসেবা অধিদফতর, বিভিন্ন জাতিসংঘ সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, মোবাইল অপারেটর, ব্যাংক, ডিজিটাল পেমেন্ট প্রতিষ্ঠান, অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here