সাবমেরিন নিখোঁজের স্থলে ‘ঠকঠক শব্দ’ শনাক্ত

0

আটলান্টিক মহাসাগরের অতল গভীরে সাবমেরিন নিখোঁজের স্থলে ‘ঠকটক শব্দ’ করা গেছে।

মঙ্গলবার ডুবোজাহাজটির অনুসন্ধান চালানোর সময় উদ্ধারকর্মীরা প্রতি ৩০ মিনিট পরপর সোনার ডিভাইসের (সাউন্ড নেভিগেশন অ্যান্ড রেঞ্জিং) মাধ্যমে এই শব্দ শনাক্ত করা হয়। 

ওই তথ্য বিবরণী থেকে আরও জানা গেছে, শব্দ শনাক্তের চার ঘণ্টার পর অতিরিক্ত সোনার ডিভাইস মোতায়েন করা পরও ওই শব্দ শোনা গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো ডুবোজাহাজের আরোহীরা সাহায্যের জন্য কোনো কিছু দিয়ে এই শব্দ করছিলেন।

তবে মঙ্গলবার ঠিক কখন বা কতক্ষণের জন্য ওই ঠকঠক শোনা গিয়েছিল ওই তথ্য বিবরণী থেকে তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

মঙ্গলবার রাতে পাঠানো পরবর্তী আপডেটে আরও শব্দ শোনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে তথ্য বিবরণীতে। এবার পরবর্তী আপডেটে এটিকে ঠকঠক হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি।

উল্লেখ্য,সমুদ্রের নিচে পড়া থাকা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ‘টাইটান সাবমার্সিবল’’ নামে ডুবোযানটি যাত্রা শুরু করে। গত রবিবার সমুদ্রে ডুব দেওয়ার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই সেটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর রবিবার, সোমবার এবং মঙ্গলবার পেরিয়ে বুধবার চলে আসলেও এখনও (রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) সেটির কোনও সন্ধান মেলেনি।

কী দিয়ে তৈরি নিখোঁজ সেই টাইটান সাবমেরিন?

টাইটান ডুবোজাহাজটি ‘ওশানগেট এক্সপিডিশন’ নামের একটি পর্যটন সংস্থা তৈরি করেছে। ২২ ফুটের এই ডুবোজাহাজ তৈরি করা হয়েছে কার্বন ফাইবার ও টাইটানিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ইঞ্জিনিয়াররা ওশানগেটের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যৌথভাবে এই ডুবোজাহাজ তৈরি করেন।

টাইটানের দৈর্ঘ্য ৬.৭ মিটার, প্রস্থ ২.৮ মিটার এবং উচ্চতা ২.৫ মিটার। সমুদ্রের ৪ হাজার মিটার গভীরতা পর্যন্ত নামতে সক্ষম এই ডুবোযান।

সাবমেরিনটির ওজন ১০,৪৩২ কেজি এবং এটি সর্বোচ্চ তিন নটিকাল মাইল গতিতে ভ্রমণ করতে পারে।

টাইটানের অন্দরে রয়েছে ১০০২টি বৈদ্যুতিক থ্রাস্টার। পাশাপাশি রয়েছে সামুদ্রিক রেফিন ক্যামেরা, ৪০ হাজার লাইট এবং একটি রোবোটিক্স লেজার স্ক্যানার।

জাহাজটির অন্দর ছোট হওয়ায় ইঞ্জিন এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ মূলত বাইরের দিকে রয়েছে। ডুবোজাহাজটির ভিতরে একটি শৌচালয় রয়েছে।

টাইটান একটি শক্তিশালী প্লেস্টেশন কন্ট্রোলার দ্বারা পানির উপরে থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। যদিও ডুবোযানটিতে নেই কোনও জিপিএস ব্যবস্থা।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেসেজের মাধ্যমে ট্র্যাকিং দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাইটান যা একটি ‘আল্ট্রা-শর্ট বেসলাইন (ইউএসবিএল)’ সিস্টেমের মাধ্যমে তথ্য বিনিময় করতে সক্ষম।

ওই ডুবোজাহাজে যে ক্যামেরাগুলো লাগানো রয়েছে সেগুলোর সাহায্যে সমুদ্রের উপর থেকে জাহাজের গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়।

টাইটানে একটি মাত্র বোতাম (সুইচ) রয়েছে। বাকি সব কিছু নিয়ন্ত্রিত হয় ‘টাচ স্ক্রিন’ এবং কম্পিউটারের সাহায্যে। সূত্র: সিএনএন, দ্য সান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here