সাতক্ষীরায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে মরা ও রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির হিড়িক। সাতক্ষীরায় বেশ কিছু অসাধু মাংস ব্যবসায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর এই মরা গরু ও রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে দেদারছে চালিয়ে আসছে এই অসদ কার্যক্রম। রমজান মাসের শুরুতেই সোমবার দিনগত মধ্যরাতে আফসার হোসেন নামে এক মাংস ব্যবসায়ী মৃতগরু জবাই করে জনতার হাতে ধরা খান। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বলাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মাংস ব্যবসায়ী আফসার কসাই রাতের আধারে রোগাক্রান্ত, মৃতগরু আলমসাধু গাড়িতে করে ঝাউডাঙ্গা বাজারে নিয়ে আসে। পরে বাজারের নাইটগার্ডসহ বণিক সমিতির লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে ওই মৃত গরু গাড়ির মধ্যেই জবাই করে দেয়। গরু জবাইয়ের পরে কোন রক্ত বের না হওয়ায় বাজারের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা এগিয়ে এসে ওই মৃত গরু দেখতে পায়। এসময় কসাই আফসার মৃত গরু ফেলে পালানোর চেষ্টা করলে ঝাউডাঙ্গা বণিক সমিতির লোকজন তাকে ধরে ফেলে অফিসে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে মাংস ব্যবসায়ী কসাই আফসারের সাথে টাকার দেন দরবার চলতে থাকে। টাকা না দিলে পুলিশের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হবে। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে ততক্ষণে কসাইকে রক্ষাকরতে বণিক সমিতির নেতাদের সাথে টাকায় রফাদফা হয়। এলাকাবাসীর এমন অভিযোগের খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশের ন্যাশনাল সার্ভিস ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে না পৌঁছে বণিক সমিতির লোকজনকে কথা বলতে বলে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। আফসারকে গণধোলাই দেওয়ার জন্য এলাকাবাসী হৈ-চৈ করতে থাকে। এর মধ্যে বণিক সমিতির লোকজন মাংস ব্যবসায়ী আফসারকে থানা পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে সে স্ট্রোক করেছে, তাকে হাসপাতালে নিতে হবে এমন নাটক সাজিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে কৌশলে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। তবে ঘটনাস্থলে মৃত গরু পড়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এলাকার পশু ডাক্তারদের যোগসাজসে তাদের মাধ্যমে সন্ধান নিয়ে মাংস ব্যবসায়ী কসাই আফসার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে মৃত গরু ও রোগাক্রান্ত গরু খুব কম টাকায় ক্রয় করে থাকেন। তারপর গোপনে জবাই করে সেই সমস্ত মৃত পশুর মাংস অবাধে বিক্রি করে আসছেন। এই অসাধু মাংস ব্যবসায়ী আফসার নিয়মিত আকড়াখোলা বাজারে মাংস বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া এসব মাংস তিনি ঝাউডাঙ্গা বাজার, বৈকারী বাজার ও বেলেডাঙ্গা বাজারে মাংস ব্যবসায়ীদের নিকট সরবরাহ করে বিক্রি করে থাকেন। এই আফসারের সাথে সাতক্ষীরার একজন বড় মাংস ব্যবসায়ীর যোগসাজস রয়েছে। তিনি মূলত আইনশঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করে থাকেন বলে এমন অভিযোগও করেছেন এলাকাবাসী। এসব অসৎ মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
রোগাক্রান্ত মৃত গরু জবাইয়ের বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ী কসাই আফসারের নিকট জানাতে চাইলে তিনি জানান, ভাই আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আপনার সাথে পরে কথা বলবো। এখন একটু ব্যস্ত আছি।