সম্পদের অর্ধেক দাতব্য কাজে ব্যয় ধনকুবের পিএনসি মেননের (ভিডিও)

0

নাম তার পুথান নাদুভাক্কাট্ট চেন্থামরাক্ষা মেনন, যিনি মূলত পিএনসি মেনন নামে পরিচিত। ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের নাগরিক পিএনসি মেনন। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে দুবাইয়ে বসবাস করেন। সেখানে গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য।

তিনি ভারতীয় সোভা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। এটি দুবাই, ভারত ও যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক বহুজাতিক রিয়েল এস্টেট ডেভালাপার্স কোম্পানি।

এ সময় নিজের মোট সম্পদের অর্ধেক দাতব্য কাজে ব্যয় করার কথা জানান পিএনসি মেনন।

তিনি বলেন, “শুধু অর্থ আয় করার জন্য আমি ব্যবসা করি না। বরং আমার মোট সম্পদের অর্ধেক ব্যয় করি বিভিন্ন দাতব্য কাজে।”

দাতব্য এই অর্থ তিনি ওমান, ভারত ও দুবাইয়ে ব্যয় করেন বলে জানান পিএনসি মেনন।

এছাড়া বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সম্পদশালী মার্কিন ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট ও মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা ‘দ্য গিভিং প্লেজ’ এর অন্যতম অনুদান প্রদানকারী পিএনসি মেনন।

ভারতের কেরালার বাসিন্দা পিএনসি মেনন। ভারতে সোভা গ্রুপের প্রধান কার্যালয় বেঙ্গালুরুতে। তবে পুনে, দিল্লি, গুজরাটসহ বিভিন্ন রাজ্যে আকাশচুম্বি ভবন তৈরি করেছে তার কোম্পানি।

এই কোম্পানির যেসব সিস্টার কনসার্ন রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম- সোভা হাইরাইজ ভেঞ্চার্স প্রাইভেট লিমিটেড, সোভা অ্যাসেটস প্রাইভেট লিমিটেড, সোভা নান্দামবাক্কাম প্রাইভেট লিমিটেড, সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেড কোম্পানি এলএলসি, সোভা সিটি, সোভা তাম্বারাম ডেভালাপার্স লিমিটেড, সোভা ডেভালাপার্স (পুনে) লিমিটেড এবং সোভা ইনভেস্টমেন্ট এলএলসি।

১৯৪৮ সালে ভারতের কেরালার ত্রিসুরে জন্ম পিএনসি মেননের। তার বাবা ত্রিসুরের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু মাত্র ১০ বছর বয়সে বাবাকে হারান পিএনসি মেনন। তিনি স্থানীয় শ্রী কেরালা ভার্মা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করতে পারেননি। ছিটকে পড়ে যান শিক্ষাজীবন থেকে। এরপর শুরু করেন ইন্টারিয়র ডিজাইনিংয়ের ব্যবসা।

২৬ বছর বয়সে তিনি ওমানে পাড়ি জমান। বেশ কয়েক বছর প্রচেষ্টার পর সেখানে তিনি তার ইন্টারিয়র ডেকোরেশনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে তিনি ভারতের বেঙ্গালুরুতে সোভা লিমিটেড নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। স্ত্রীর সোভার নামেই তিনি নামকরণ করেন তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের। ব্যক্তিগত জীবনে তিন সন্তানের জনক পিএনসি মেনন। তার দুই মেয়ে বিন্দু ও রেবাথি। আর এক ছেলে রবি মেনন।

ওমান থেকে কেন দুবাইয়ে আসলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে পিএনসি মেনন জানান, মূলত ছোট মেয়ে রেবাথির পড়াশুনার জন্যই তিনি ওমান থেকে পাড়ি জমান দুবাইয়ে। ইন্টারিয়র ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনার জন্য সেখানকার একটি আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন রেবাথি। তার জন্যই ওমান থেকে পুরো পরিবার নিয়ে দুবাইয়ে চলে আসেন পিএনসি মেনন।

এরপর সেখানেও তিনি গড়ে তোলেন আইকনিক প্রজেক্ট। দুবাইকে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ও ব্যবসা-বান্ধব স্থান উল্লেখ করে জীবনের পরবর্তী সময় সেখানেই কাটিয়ে দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এই ধনকুবের।

দুবাইকে কেন এতটা নিরাপদ ভাবছেন- এই প্রশ্নের জবাবে পিএনসি মেনন বলেন, এর প্রধান কারণ এখানে কোন ধরনেও দুর্নীতি নেই। পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত একটি দেশ। তাছাড়া এখানকার সরকার খুবই উৎপাদনশীল একটি সরকার। কোনো বিষয় নিয়ে সরকারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হলে মাত্র দুই মিনিটেই তাদের সঙ্গে দেখা করা যায় এবং বিষয়টি সমাধান করা যায়। এছাড়া দুবাইয়ের জীবনমানও তার ভীষণ পছন্দ। সেই সঙ্গে সেখানকার নারীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও তার দুবাইয়ে পাড়ি জমানোর একটি অন্যতম কারণ।

তিনি বলেন, বিশ্বের কোনও দেশে এতগুলো সুযোগ-সুবিধা এক সঙ্গে পাওয়া যাবে না, যা দুবাইয়ে পাওয়া যায়। এ কারণেই জীবনের বাকি সময় দুবাইয়ে কাটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছাপোষণ করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here