সমুদ্র শহর থেকে হাজারো যাত্রী নিয়ে ঢাকা গেল প্রথম ট্রেন

0

সমুদ্র শহর কক্সবাজার থেকে ১০২০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে প্রথম ট্রেন ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ যাত্রা শুরু করেছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে ঝিঁনুকের আদলে তৈরি করা আইকনিক রেল স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। যা রাজধানী ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে। ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ নামের এই ট্রেনটিতে ২০টি বগি রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে কক্সবাজার জেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। 

প্রথম ট্রেন যাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের মাঝেও ছিল আনন্দ-উচ্ছাস। প্রথম ট্রেন ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’-এর যাত্রা পরিদর্শনে রেল প্ল্যাটফর্মে জড়ো হন স্থানীয়রাও। 

তিনি জানান, এ রুটে আপাতত দুটি ট্রেন চলাচল করবে। কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন ট্রেন ছাড়বে বেলা ১২ টা ৩০ মিনিটে। এটি চট্টগ্রাম পৌঁছাবে বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে। পর্যটন শহর থেকে রাজধানী ঢাকা যেতে সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিট। অন্যদিকে ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়। এটি কক্সবাজার পৌঁছাবে পরদিন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে।

তিনি জানান, ট্রেনে এসি স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩২৫ টাকা। নন এসি শোভন শ্রেণির ভাড়া ৬৯৫ টাকা। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের ভাড়া এসি ৪৭০ টাকা এবং নন এসি ২৫০ টাকা।

শুক্রবার যাত্রীবাহি প্রথম ট্রেনের যাত্রাকালে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। তিনি প্রথম ট্রেনের যাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এসময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাণিজ্যিকভাবে এ রেল পথে ট্রেন চলাচল শুরু হলো। কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামের আন্তঃনগর এই ট্রেন ২০টি বগি নিয়ে কক্সবাজার থেকে ঢাকা ও ঢাকা থেকে কক্সবাজার চলাচল করবে। এ ট্রেন ডিসেম্বর মাস জুড়ে চলাচল করবে এ রেলপথে। চাহিদা বাড়লে বগিও বাড়ানো হবে। জানুয়ারি থেকে এই রুটে রেলের সংখ্যা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। 

প্রথম যাত্রীবাহি ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেনের চালক লোকোমাস্টার আব্দুল আউয়াল রানা বলেন, কক্সবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে প্রথম ঢাকায় যাচ্ছে ট্রেন। এ ট্রেনটি চালানোর একটি ইতিহাসের স্বাক্ষী হলাম। আমার জন্য এটি একটি স্বপ্নের মতো, খুবই ভালো লাগছে। অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি আরো জানান, তার প্রথম সন্তান জন্ম নেয়ার পর যে আনন্দ হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি আনন্দ লাগছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মো. আপেল মাহমুদ জানান, কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম সার্বক্ষণিক দ্বায়িত্বরত থাকবে। টহল টিমের পাশাপাশি থাকবে স্পেশাল ফোর্স। পর্যটকদের সুবিধার্থে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম, জরুরি সেবা ও হটলাইন।’

কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ.ন.ম হেলাল উদ্দিন বলেন, বাণিজ্যিকভাবে রেল চালু হওয়ায় কক্সবাজারে আগের তুলনায় কয়েকগুণ পর্যটক বাড়বে। রাজধানীর সাথে রেল যোগাযোগের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার পর্যটন খাতে নতুন দিগন্তের যুগে সূচনা হলো। 

ঢাকার বাড্ডা থেকে আসা পর্যটক সাফিয়া জানান, ‘বাড়িতে বসেই ট্রেনের টিকিট কেটেছি। তার পর ঢাকা থেকে বাসে করে স্বপরিবারে কক্সবাজার আসি। বাসে করে দীর্ঘ যাতায়াতে যানজটসহ কষ্টদায়ক ও ভোগান্তিকর। পরিবারের বয়স্ক সদস্যসের জন্য খুবই কষ্টদায়ক ছিল। তবে পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে কক্সবাজার থেকে প্রথমবারে ট্রেনে ঢাকায় ফিরছি। আরামদায়ক যাত্রা হবে, খুবই আনন্দ লাগছে।’ 

একইভাবে ঢাকা থেকে আসা রায়হান, আনোয়ার, সায়েমসহ পর্যটকরা জানান, এখন থেকে ট্রেন যোগে আরামদায়কভাবে কক্সবাজারে আসা-যাওয়া যাবে। এটা ভাবতেই খুবই ভালো লাগছে। 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here