জাতীয় পার্টির মহাসচিব কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমরা জানি না আগামী নির্বাচন নিয়ে কী হবে। আমরা চাই ভালো কিছু হোক। কিন্তু বড় দুটি দলের একদফার কারণে কোনো সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হয় কিনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় কিনা, যদি অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে তৃতীয় কোনো পক্ষ সুযোগ নেয় কিনা, গণতন্ত্র ব্যাহত হয় কিনা। এ বিষয়ে আমরা ভয় পাচ্ছি, আতঙ্কে আছি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা এলাকায় স্থানীয় জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক সভায় এ সব কথা বলেন তিনি।
সরকারের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, সরকার যেন সমস্ত রাজনৈতিক দলকে এক টেবিলে আসার অনুরোধ করে, এক টেবিলে বসার সুযোগ করে দিয়ে একটা পথ বের করে। যে পথ দিয়ে আমরা সবাই মোটামুটিভাবে সন্তুষ্ট হয়ে একটা সিস্টেমে নির্বাচনটা যেন করতে পারি। জনগণের ভোটের অধিকার যেন প্রয়োগ হয়, তার ব্যবস্থা করতে পারি।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উদ্দেশে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, আপনারা এক দফা চান। কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে বাড়লো, তার জন্য তো আপনারা একদফা করেন না। দেশে যে লাখ লাখ বেকার, শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই, তাদের জন্য কী করা যায়, সেটা তো আপনারা মনে করেন না। কর্মবিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর জন্য আপনারা তো কেউ কথা বলেন না। বলেন না কারণ, শুধু ক্ষমতাই আপনাদের টার্গেট। আমরা বলি, শুধু ক্ষমতায় গেলেই হবে না, জনগণের কথাও চিন্তা করতে হবে।
মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, বড় দুটি দল পালাক্রমে ৩২ বছর যাবৎ ক্ষমতায় আছে, অথচ নির্বাচনটা কোন প্রক্রিয়ায় হবে, আজ পর্যন্ত এটার বিষয়ে ঐকমত্য হতে পারলো না। দফা বাদ দিয়ে এক টেবিলে বসার অনুরোধ করে তিনি বলেন, জেদাজেদি বাদ দিয়ে জনগণকে ভয়ের মধ্যে না রেখে, একদফা একদফা করে সংঘাতময় অবস্থায় না গিয়ে আসুন সবাই মিলে এক টেবিলে বসে আলোচনা করি। সুষ্ঠু নির্বাচন করার একটা পথ বের করি। কিন্তু কেউ কথা শোনে না। ভালো কথা কারও মজা লাগে না। সবাই আছে নিজেদের চিন্তায়। ওনারা যেহেতু কথা শোনেই না, আমরাও চিন্তা করলাম ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। বিএনপি-আওয়ামী লীগের বাইরে যদি জনগণ চায় আমরাও ক্ষমতায় যেতে পারি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই দলই ভেতরে ভেতরে জাতীয় পার্টিকে জোটে যেতে আহ্বান করে। বিএনপি বলে কী চান, আলোচনায় আসেন। আর আওয়ামী লীগ বলে আমাদের সঙ্গে আসুন, নতুন করে ভালোবাসা হোক। অনেকেই জানতে চান, বিএনপি-আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করবেন কিনা, কিংবা জোট হবে কিনা। আমরা বলি, জোট তো আমরা করতে চাই না। আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলই আমাদের সঙ্গে জোট করতে চায়। কারণ তাদের আত্মবিশ্বাস নেই যে, এককভাবে ক্ষমতায় যেতে পারবে। আমরাও বলেছি, নির্বাচন আসুক, দেশের অবস্থা বুঝে, মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝে জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেবো নির্বাচনে কিভাবে যাবো।