৭ অক্টোবর হঠাৎ করেই ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় ১২ শত মানুষের প্রাণ যায়। এসময় দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
এরপরই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে হামাস নির্মূলের অজুহাতে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তবে হামাস নির্মূলে ইসরায়েল কতোটা সফল সে নিয়ে একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তারা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবির সত্যতার সাথে বাস্তব চিত্র মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছে।
আসলে কতো হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে সেই হিসেবে যাওয়ার আগে বিবিসি জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের আগে গাজায় ৩০ হাজারের মতো হামাস যোদ্ধা ছিলেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বরাতে এই সংখ্যা অনুমান করেছে বিবিসি।
হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মতো অনেক জ্যেষ্ঠ হামাস নেতাই বিদেশে বসবাস করেন। তবে সম্মুখ সমরে নেতৃত্ব দেয়া অনেক হামাস নেতা এখনো গাজাতেই অবস্থান করছেন।
সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা ১৩ হাজারের মতো হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তবে তারা এই সংখ্যা কিভাবে গুনেছে তার কোনো ধারণা দেয়নি।
তবে ইসরায়েল কয়েকজন নিহত হামাস নেতার নাম প্রকাশ করেছে। অক্টোবর থেকে তারা মাত্র ১১৩ জন নিহত হামাস নেতার নাম প্রকাশ করতে পেরেছে। যাদের অধিকাংশকেই যুদ্ধের প্রথম তিন মাসে হত্যা করা হয়েছে। এই বছরের মার্চ মাসের শুরু পর্যন্ত হামাসের কোনো সিনিয়র হামাস নেতাকে হত্যা করার কথা জানায়নি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
২৬ মার্চ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের সামরিক শাখার সহকারী কমান্ডার মারওয়ান ইসাকে হত্যা করেছে। তাকে ইসরায়েল অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। যুদ্ধে এ পর্যন্ত নিহত হওয়াদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হামাস নেতা। তবে সেখানেও আছে ধোঁয়াশা, যুক্তরাষ্ট্রও মনে করছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে হামাস এখনো তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
এরপরও হামাসের কয়েকজন নেতাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে সেই তালিকায় থাকা অনেকেই বহু আগে মারা গেছে বলে দাবি করেছে হামাস আর বাকিরা এখনো গাজাতেই জীবিত অবস্থায় আছে। এরপরই সেই তালিকার ব্যাপারেও নিজেদের ভুল স্বীকার করে ইসরায়েল। তাদের দাবি, কারিগরি ত্রুটির কারণে এমনটা ঘটেছে।
তাই সবমিলিয়ে হামাস নির্মূলে ইসরায়েলের দাবি ও যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পাওয়া খবরের মধ্যে আছে বিস্তর ফারাক।