শ্রবণ সমস্যা সমাধানে ইয়ারবাডের ব্যবহার বাড়ছে বিশ্বজুড়ে

0
শ্রবণ সমস্যা সমাধানে ইয়ারবাডের ব্যবহার বাড়ছে বিশ্বজুড়ে

গত দশকে ভোক্তা প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট ও ব্যক্তিগত হয়েছে, তার সর্বশেষ রূপ আরও বিস্ময়কর। সাধারণ ইয়ারবাড এখন চিকিৎসা-সহায়ক যন্ত্রের মতো কাজ করতে পারছে। যে ইয়ারবাড দিয়ে শুধু গান শোনা যেত, আজ সেটিই হালকা শ্রবণ সমস্যার সমাধানে সহায়ক। কয়েক বছর আগেও যা কল্পনাতীত ছিল, এখন তা বাস্তব।

অ্যাপলের এফডিএ-স্বীকৃত Hearing Aid Feature এই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। একসময় শুধু নয়েজ ক্যানসেলিং ও গান শোনায় সীমাবদ্ধ থাকা এয়ারপডস এখন ওভার-দ্য-কাউন্টার হিয়ারিং এইডের মানসম্পন্ন সফটওয়্যার চালাতে পারে। নতুন এয়ারপডস প্রো ৩ এই সুবিধা সমর্থন করলেও আসল বিষয় ডিভাইস নয়। ভোক্তা প্রযুক্তি ও সহায়ক স্বাস্থ্যযন্ত্রের সীমা ভেঙে যাওয়া।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, হার্ডওয়্যারটি চিকিৎসা-যন্ত্রের মতো নয়। সাধারণ স্টাইলিশ ইয়ারবাড, যেগুলো রোজই মানুষের কানে দেখা যায়। শ্রবণ-সহায়ক ফিচারটি পুরোপুরি সফটওয়্যারনির্ভর। আইফোনের একটি স্বয়ংক্রিয় শ্রবণ পরীক্ষা ব্যবহারকারীকে নিজেই নিজের শ্রবণক্ষমতা যাচাই করতে দেয়। সেন্সরের উন্নতি, ছোট প্রসেসর এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি এসব সাধারণ গ্যাজেটকে বিশেষায়িত যন্ত্রের কাজ করতে সক্ষম করছে।

বেশ কয়েকটি স্বাধীন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এই সহজলভ্য পদ্ধতির ফল অনেক ক্ষেত্রে বিস্ময়কর। দ্য গার্ডিয়ান-এর এক সাংবাদিক, যিনি শ্রবণ সমস্যায় ভুগছেন, দেখেছেন, স্বয়ংক্রিয় টেস্টে পাওয়া অ্যামপ্লিফিকেশন তার ক্লিনিক্যাল রিপোর্টের সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে গেছে। যদিও অতিরিক্ত শব্দে তিনি এখনও ঐতিহ্যবাহী হিয়ারিং এইডকেই বেশি কার্যকর মনে করেন, তবে মূল শক্তি হলো সহজ পাওয়া ও ব্যবহারযোগ্যতা।

বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষ শ্রবণ সমস্যায় ভোগেন, কিন্তু অল্পসংখ্যক মানুষই হিয়ারিং এইড ব্যবহার করেন। কারণ—খরচ, অস্বস্তি, এবং জটিলতা। ভোক্তা প্রযুক্তি তার পরিচিত ডিজাইন, স্বাচ্ছন্দ্য এবং সহজ ব্যবহার দিয়ে সেই বাধাগুলো দূর করছে। এটি চিকিৎসার বিকল্প নয়, বরং চিকিৎসা শুরু করার দরজা খুলে দিচ্ছে—যেমন স্মার্টওয়াচের অক্সিজেন ট্র্যাকিং অনেককে ঘুমের সমস্যা নিয়ে ডাক্তার দেখাতে উৎসাহ দিয়েছে।

যেভাবে ক্যামেরা পরিণত হয়েছে কম্পিউটেশনাল ইমেজিংয়ে, আর স্মার্টওয়াচ হয়ে উঠেছে ছোট স্বাস্থ্য মনিটর—ঠিক তেমনই ইয়ারবাড, রিং, চশমা ও সফটওয়্যার এখন প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও ব্যক্তিগত সহায়তার নতুন পথ তৈরি করছে। দৈনন্দিন প্রযুক্তি এখন যত্নকে আরও সহজ, স্বাভাবিক এবং জীবনের অংশ করে তুলছে।

সূত্র: উবার গিজমো 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here