শেরপুরে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, বন্যার শঙ্কা

0

শেরপুর জেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের মেঘালয়ের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমেশ্বরী নদীর পানিও বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। অন্যদিকে মহারশি, ভোগাই ও মালিঝি নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচে থাকলেও প্রতি ঘণ্টায় পানি বাড়ছে। স্থানীয়রা বলছে এ অবস্থা চলতে থাকলে এই অসমেয় বড় ধরনের বন্যা হতে পারে।
    
আজ মঙ্গলবার শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, দুপুরে চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। ভোগাই নদী (নকুগাঁও পয়েন্ট) বিপৎসীমার ৩৭৯ সেন্টিমিটার নিচে, নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ২৫৭ সেন্টিমিটার নিচে এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে বিপদসীমার ৬৮৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। ঝিনাইগাতী উপজেলার ভায়াডাঙ্গা সড়কের কাড়াগাঁও বটতলা বাজার এলাকায় সোমেশ্বরী নদীর পানি রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নির্মাণাধীন চাপাতলী সেতুর উভয় পাশের রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বাগেরভিটা এলাকায় কয়েকটি দোকান এবং কিছু বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

ঝিনাইগাতী নয়াগাঁও মাজার সংলগ্ন কবরস্থান রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে প্রশাসনের আগাম বার্তায় কৃষক দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলায় অনেকটা দুঃশ্চিতা কমেছে কৃষকের। কিন্ত সবজি চাষিরা আতঙ্কে আছেন। একে বাঁকাকুড়া ও ফুলহারির মধ্যবর্তী এলাকায় পাহাড়ি ঝর্ণার পানি উপচে ফসলের মাঠে পানি ঢোকা শুরু হয়েছে। মহারশি নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এতে নদী সংলগ্ন দীঘিরপাড় ফাযিল মাদ্রাসা এলাকায় নদীর পাড় ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। মালিঝি নদীর পানিও বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢোকা শুরু করেছে। 

আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামালের বরাতে জানা গেছে, বুধবার (২১ মে) দুপুর পর্যন্ত হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ভারতের আসাম ও মেঘালয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হলে নালিতাবাড়ীর নদনদীতে পানি আরও বাড়তে পারে এবং বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে, যা জনজীবন ও কৃষিতে ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। জেলা কৃষি বিভাগ এরই মধ্যে কৃষকদের পাকা ধান দ্রুত কেটে উঁচু স্থানে সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিংসহ প্রশাসনিক প্রস্তুতি চলছে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেছেন, বৃষ্টি ও উজানের পানিতে নদনদীর পানি বেড়েছে। তবে এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সম্ভাব্য বন্যা মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here