নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট এবং ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। শনিবার যথাযোগ্য মর্যাদায় তার জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়।
সবকটি অনুষ্ঠানের শুরুতেই বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং শেখ কামালের জীবন ও কর্মের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনা পর্বে মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও বক্তব্য রাখেন। শেখ কামালের আদর্শ ধারণ করে দেশের যুবসমাজ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে আরো উচ্চতর আসনে তুলে ধরবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন বক্তারা।
ওয়াশিংটন ডিসি
শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক জাতির পিতার আবক্ষ মূর্তি এবং শহিদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. রাশেদুজ্জামান। এরপর শহিদ শেখ কামালের জীবন ও কর্মের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও মিনিস্টার (প্রেস) এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেন।
ব্রাজিল দূতাবাস
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় অবস্থিত দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশের একমাত্র দূতাবাসে শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও তার শহিদ পরিবারের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয় এবং শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের কর্মময় ও বর্ণিল জীবনের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা শহিদ শেখ কামালের কর্মময় জীবন ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
নিউইয়র্ক কনস্যুলেট
কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের উপর নির্মিত একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
শহিদ শেখ কামাল, জাতির পিতা ও তার পরিবারের অন্য শহিদ সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
কনসাল জেনারেল তার সূচনা বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শেখ কামাল সম্পর্কে আলোচনাকালে কনসাল জেনারেল মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের শিল্প সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্মরণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে তিনি পথিকৃৎ ছিলেন বলে মন্তব্য করেন কনসাল জেনারেল।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শহিদ শেখ কামালের স্ত্রী শহিদ সুলতানা কামালের বড় বোন খালেদা রহমান টেলিফোনে সংযুক্ত হয়ে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন। অন্যান্য বক্তারা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের আলোকিত জীবন ও কর্মের উপর আলোকপাত করতে গিয়ে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে তার অবিস্মরণীয় অবদানের কথা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন।