শিশুদের গ্রীষ্মকালীন রোগ বালাই

0

পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া

গরমের সময় শিশুদের ডায়রিয়া হয়ে থাকে। এতে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও খনিজ লবণ বের হয়ে যায়। তাই ডায়রিয়া হলে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শমতো বয়স অনুযায়ী পরিমাণ মতো স্যালাইন খাওয়াতে হবে।

ঘামাচি

গরমকালে শিশুর শরীরে ঘামাচি হতে পারে। সেজন্য প্রতিদিন গোসল করিয়ে পরিষ্কার সুতির পোশাক পরাতে হবে। ঘামে ভেজা শরীর মুছে দিয়ে কাপড় বদলানো উচিত। ঘামাচির জায়গায় শিশুদের উপযোগী পাউডার ব্যবহার করতে হবে। গরমে শিশুকে বেশিক্ষণ ডায়াপার না পরিয়ে রাখাই ভালো।

জ্বর

বিভিন্ন কারণে জ্বর হতে পারে। বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণজনিত জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, হাম ও জলবসন্ত, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, নিউমোনিয়া, প্রস্রাবের সংক্রমণ ইত্যাদি। তবে এ সময়ে সাধারণত ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ অত্যধিক বেশি হয়। জ্বর হলে প্রাথমিকভাবে পানি দিয়ে স্পঞ্জিং করা উচিত। রোগীকে ফ্যানের বাতাসের নিচে রাখুন। খাবার স্যালাইন, ফলের রস, শরবত ইত্যাদি তরল খাবার বেশি বেশি খাওয়াতে হবে। অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।

সর্দি-কাশি

গরমে শিশুদের ক্ষেত্রে ঠান্ডার সমস্যাটাও বেশি হতে দেখা যায়। গরমে অতিরিক্ত ঘামের ফলে ঠান্ডা লেগে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ ও নিউমোনিয়া হতে পারে। শিশুদের সংক্রমণের ফলে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ ও নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট নাও হতে পারে। শিশুর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ হলো-জ্বর, দ্রুত ভারী ও ঘনঘন শ্বাসপ্রশ্বাস, শ্বাসের সঙ্গে শোঁ শোঁ শব্দ, বুকের পাঁজর বা খাচা ডেবে যাওয়া, খেতে না পারা বা খাওয়ানোতে অসুবিধা হওয়া, দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব।

হঠাৎ অজ্ঞান হওয়া

প্রচণ্ড গরমে শিশু মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা হিট স্ট্রোকও হতে পারে। পানিশূন্যতা হলে, রক্তে সুগার কমে গেলে বা ব্লাড পেশার কমে গেলে শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারে। এ অবস্থায় আতঙ্কিত না হয়ে একদিকে কাত করে দিতে হবে, যাতে মুখের লালা বেরিয়ে আসতে পারে। শোয়ানোর পর দুই পায়ের দিক মাথার চেয়ে কিছুটা উঁচু করে রাখতে হবে। পোশাক ঢিলা করে দিতে হবে। ঘাড়ের নিচে উঁচু কিছু রেখে মাথাটা নিচে নামিয়ে থুতনি উপরে রাখতে হবে, যাতে শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচলে বাধা তৈরি না হয়। তারপর দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ

গরমে শিশুরা অসুস্থ  হয়ে যায়, তখন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

লেখক : শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক মাদার এন্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here