শাহাদাত-নাজিবউল্লাহর ব্যাটে সিলেটকে হারালো চট্টগ্রাম

0

একের পর এক সুযোগ দিলেন নাজিবউল্লাহ জাদরান ও শাহাদাত হোসেন। একটিও নিতে পারলেন না সিলেট স্ট্রাইকার্সের ফিল্ডাররা। জীবন পেয়ে পূর্ণ ফায়দা নিলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দুই ব্যাটসম্যান। ঝড়ো দুই ফিফটিতে দলকে এনে দিলেন অনায়াস জয়। 

মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) এর দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রামের জয় ৭ উইকেটে। সিলেটের করা ১৭৭ রান ৯ বল হাতে রেখেই টপকে গেছে চট্টগ্রাম।

অথচ অনেক আগেই ফিরতে পারতেন ম্যাচ জেতানো দুই ব্যাটসম্যান। ২৬ রানে শাহাদাতের ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি বেনি হাওয়েল। আর তিনবার বেঁচে যান নাজিবউল্লাহ; ১৮ রানে তার সহজতম ক্যাচ ছাড়েন তানজিম সাকিব, ২৫ রানের সময় ডাইভ দিয়েও ধরতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত এবং ৩৪ রানে একই ভুল করেন রিচার্ড এনগারাভা।

ওই দুই ব্যাটসম্যানকে চারবার সুযোগ দেওয়ার মাশুল গুনে পরাজয়ে যাত্রা শুরু করল গত আসরের রানার্স-আপরা। ফলে বৃথা গেল জাকির হাসানের ক্যারিয়ার সেরা ৭০ রানের ইনিংস। রান তাড়ায় তৃতীয় ওভারে তানজিদ হাসানের উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। তবে চাপ বাড়তে দেননি আরেক ওপেনার আভিশকা ফার্নান্দো। লঙ্কান ওপেনারের ঝড়ে পাওয়ার প্লেতে ৫৬ রান করে চট্টগ্রাম।

আভিশকার ঝড় থামান নাজমুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হন ২৩ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ রান করা এই শ্রীলঙ্কান। পরের ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন প্রায় ৮ মাস পর ক্রিকেটে ফেরা মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রথম বলেই তিনি ফেরান ইমরানউজ্জামানকে। ছক্কা মারতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন চট্টগ্রামের কিপার-ব্যাটসম্যান।

দ্রুত দুই উইকেট পড়ার পর প্রতিরোধ গড়তে শুরুতে রয়ে-সয়ে খেলেন নাজিবউল্লাহ ও শাহাদাত। ১১ ওভারে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৭৭ রান। বেনি হাওয়েলের করা দ্বাদশ ওভার থেকে শুরু হয় নাজিবউল্লাহ ও শাহাদাতের ঝড়। ওই ওভারে দুই ছক্কায় আসে ১৬ রান। বেন কাটিংয়ের পরের ওভার থেকে ১৫।

দুটি বড় ওভারে ছন্দ পেয়ে যান দুই ব্যাটসম্যান। সঙ্গে যোগ হয় ফিল্ডারের ক্যাচ ছাড়ার মিছিল। স্রেফ ৩৫ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৯ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি করেন শাহাদাত। শেষ পর্যন্ত ৪টি করে চার-ছক্কায় সাজান ৩৯ বলের ইনিংস।

শেষ তিন ওভারে চট্টগ্রামের যখন ২৯ রান দরকার তখন এক ওভারেই ১৫ রান দিয়ে ফেলেন তানজিম। হাতছাড়া হতে বসা ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টায় আসেন নিজের আগের দুই ওভারে স্রেফ ৯ রান দেওয়া মাশরাফি। কিন্তু পারেননি। তার প্রথম তিন বলেই দুই ছক্কা ও ১ চারে ম্যাচ শেষ করে দেন নাজিবউল্লাহ। ৩০ বলের বিস্ফোরক ইনিংসে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন এই আফগান।

ম্যাচের প্রথমভাগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেটকে দারুণ শুরু এনে দেন মোহাম্মদ মিঠুন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। পাওয়ার প্লেতে আসে ৪৭ রান। শান্ত শুরুতে কিছুটা জড়সড় থাকলেও মিঠুন খেলতে থাকেন স্বাচ্ছন্দ্যে। নবম ওভারে শান্তর বিদায়েই ভাঙে ৫০ বলে ৬৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। নিহাদউজ্জামানের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ৩০ বলে ৭ চারে ৩৬ রান করা বাঁহাতি ওপেনার। তিন নম্বরে নেমে কিছুটা সময় নেন জাকির। দ্বাদশ বলে তিনি মারেন প্রথম ছক্কা। 

দলকে একশর কাছে নিয়ে ফেরেন মিঠুন। কার্টিস ক্যাম্পারের বলে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন কিপার-ব্যাটসম্যান। ৪ চার ও ২ ছক্কায় তিনি খেলেন ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস। এরপর হ্যারি টেক্টরকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন জাকির। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৪৯ বলে ৮২ রান। যেখানে টেক্টরের অবদান ২০ বলে ২৬ রান। মাত্র ৩১ বলে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি করেন জাকির। ৪৩ বলের ইনিংসে ৭ চারের সঙ্গে একটি ছক্কা মারেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট স্ট্রাইকার্স: ২০ ওভারে ১৭৭/২ (মিঠুন ৪০, শান্ত ৩৬, জাকির ৭০*, টেক্টর ২৬*; শুভাগত ১-০-১২-০, আল আমিন ৪-০-৩৫-০, বিলাল ৪-০-৩০-০, শহিদুল ৪-০-৩৪-০, নিহাদউজ্জামান ৪-০-৩১-১, ক্যাম্ফার ৩-০-৩৫-১)

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৮.৩ ওভারে ১৮০/৩ (আভিশকা ৩৯, তানজিদ ২, ইমরানউজ্জামান ১১, শাহাদাত ৫৭*, নাজিবউল্লাহ ৬১*; টেক্টর ৩-০-১৬-০, তানজিম ৪-০-৪৮-০, এনগারাভা ৩-০-১৭-১, নাজমুল ৩-০-৩০-১, মাশরাফি ২.৩-০-২৫-১, হাওয়েল ২-০-২৬-০, কাটিং ১-০-১৫-০)

ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাজিবউল্লাহ জাদরান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here