গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও লোহিত সাগর বাণিজ্যপথ ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ থাকছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলার কারণে জাহাজ মালিক ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো এই পথ এড়িয়ে বিকল্প রুটে পণ্য পরিবহনে বাধ্য হচ্ছে।
সম্প্রতি হুথি বিদ্রোহী নেতারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হচ্ছে কিনা, তা তারা পর্যবেক্ষণ করবেন। চুক্তি লঙ্ঘিত হলে ইসরায়েলের জাহাজ ও অন্যান্য পণ্যবাহী নৌযানের ওপর হামলা অব্যাহত থাকবে।
হুথি বিদ্রোহীরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১০০ বারেরও বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এতে দুইটি জাহাজ ডুবে গেছে এবং অন্তত চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন। এই হামলার কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বিঘ্ন ঘটেছে এবং রুট পরিবর্তনের ফলে পরিবহন খরচ বেড়েছে।
বিকল্প পথে পরিবহন
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি বেসিক ফানের সিইও জে ফোরম্যান বলেন, লোহিত সাগর দিয়ে পণ্য পরিবহন করার ঝুঁকি আমি নিতে চাই না। অতিরিক্ত খরচ হলেও আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে পণ্য পরিবহন করাই নিরাপদ। বিশ্বখ্যাত লজিস্টিক কোম্পানি সি.এইচ. রবিনসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাট ক্যাসেল বলেন, সুয়েজ খালের মাধ্যমে পরিবহন পুনরায় শুরু করতে বেশ সময় লাগবে। ঝুঁকি হ্রাস পেলে রুটটি ফের চালু করা হতে পারে।
বীমা ও নিরাপত্তা সংকট
জাহাজ মালিকদের জন্য বীমা প্রিমিয়ামের উচ্চ হারও বড় একটি চ্যালেঞ্জ। বীমা বিশেষজ্ঞদের মতে, লোহিত সাগরে প্রবেশ করা জাহাজগুলোর বীমা প্রিমিয়াম বর্তমানে জাহাজের মূল্যের ০.৬ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, লোহিত সাগরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত। ফলে এ পথ ব্যবহার করে বাণিজ্য পরিচালনা আপাতত অনিরাপদ।
বিশ্বের বড় জাহাজ পরিবহন কোম্পানিগুলো যেমন নরওয়ের ওয়ালেনিয়াস উইলহেলমসেন এবং সুইডিশ রিটেইলার এইচঅ্যান্ডএম জানিয়েছে, তারা লোহিত সাগর এড়িয়ে চলার পরিকল্পনা করছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প পথে পণ্য পরিবহন অব্যাহত থাকবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল