লসএঞ্জেলেসে বাংলাদেশ মেলা

0

অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে স্মরণাতীতকালের বিপুল জনসমাগমে ক্যালিফোর্নিয়ার লসএঞ্জেলেসে ২ দিনব্যাপী বাংলাদেশ মেলা অনুষ্ঠিত হলো। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন নগর বাউল জেমস। ২৬ ও ২৭ মে লসএঞ্জেলেস সিটির ভার্জিল মিডল স্কুল খেলার মাঠে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলার শেষ দিনে মানুষের জন্য তিল ধারনের জায়গা ছিল না। মানুষ গাড়ির উপর, চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে জেমসের গান উপভোগ করেন বলে সেখানকার সাংবাদিক তপন দেবনাথ জানান।

শিল্পীর তুলিতে যতটুকু সুন্দর তার সবটুকুই ছিল এখানে। সন্ধ্যার হিমেল হাওয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া মাতাল সুরে উদ্দীপ্ত কারিগর ছিলেন নগর বাউল জেমস। তার গানে মানুষ হেলেছে, দুলেছে, নেচেছে। চিৎকার আর কলরবে ধ্বনিত হয়েছে “গুরু জেমস”, আবার কেউ বা বলেছেন “ইউ আর দ্যা বেস্ট ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ”। অর্থাৎ এন্টারটেইনমেন্ট বলতে যে জিনিসগুলো বোঝায় বা যে উপাদানের সমষ্টিতে এন্টারটেইনমেন্ট হয় তার সবটুকুই এখানে পূর্ণ হয়েছে কানায় কানায় নগর বাউলের অসাধারণ সব গানে। মেলার আর এক আকর্ষণ ছিল নিউইয়র্ক থেকে আগত বাপা শিল্পীগোষ্ঠীর অসাধারণ শৈল্পিক প্রদর্শন। হাসানুজ্জামান সাকি রচিত ইতিহাস ভিত্তিক নৃত্যানুষ্ঠান। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন এ্যানী ফেরদৌস। তাদের প্রদর্শিত অসাধারণ নাচে-গানে স্থিরচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের পুরো ইতিহাসকেই অডিয়েন্সের সামনে তুলে ধরেছেন। যা ছিল বাংলাদেশ মেলার বিশাল সার্থকতা।

ভিআইপি অতিথিবৃন্দের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ফ্লোরিডা থেকে আগত আলী আশরাফ, চট্টগ্রাম প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জামিউল মাহমুদ জামীসহ অনেকে।

অতিথিবৃন্দের সকলকেই ক্রেস্ট দিয়ে সম্মান জানানো হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক আমিনুল ইসলামকে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডের নিবেদিত প্রাণ হিসেবে তার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন ইউএস রিপ্রেজেন্টেটিভ জিমি গোমেজ।

চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর ধরে যারা লসঅ্যাঞ্জেলসে বসবাস করছেন তাদের ভাষ্যমতে, এর আগে এত অধিক মানুষের সমাগম ক্যালিফোর্নিয়ার মাটিতে আর কোনো অনুষ্ঠানে  হয়নি। বাংলাদেশ মেলার জয় জয়কার, এরকম শত মানুষের মতামত বাংলাদেশ মেলা কমিটিকে আরো উজ্জীবিত ও প্রাণবন্ত করে তুলবে ভবিষ্যতে। বাংলাদেশ মেলা কমিটির আয়োজকবৃন্দের মধ্যে ছিলেন সভাপতি নজরুল আলম, জেনারেল সেক্রেটারি জামিউল ইসলাম বেলাল, কনভেনর সায়েদুল হক সেন্টু, সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, রানা হাসান মাহমুদ, মো. জামাল হোসেন, মোহাম্মদ ইসলাম রফিক, হুমায়ূন কবির, ইলিয়াস টাইগার শিকদার, তৌফিক ছোলেমান খান তুহিন প্রমুখ। মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী।
মেলার প্রেসিডেন্ট নজরুল আলম আগত সকল নেতৃবৃন্দ ও দর্শকদেরকে বাংলাদেশ মেলা কমিটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
সমগ্র অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন সাজিয়া হক মিমি ও সোহানা। মেলা উপলক্ষ্যে ‘ঐতিহ্য’ নামে একটি মনোরম সংকলন প্রকাশ করা হয়। মেলাকে ঘিরে বিভিন্ন রকম পণ্যের স্টল ও খাবারের স্টল দেওয়া হয়। স্টলগুলোতে আশাতীত বেচা বিক্রি হয়। এমন কি চা কেনার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। আয়োজকদের সাথে এই প্রদিবেদকের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে তারা আগেই জানিয়েছেন যে, ব্যাপক লোক সমাগম হতে পারে। সেই ধারণা মাথায় রেখেই সব ধরণের প্রস্ততি নেওয়া ছিল। যার কারণে এত বড় আয়োজনে বিশেষ কোনো সমস্যা ছাড়াই সফল সমাপ্তি হয়েছে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here