লন্ডনে ৫০০ বছরের প্রাচীন ওক গাছ কেটে ফেলা নিয়ে বিতর্ক

0

লন্ডনে অনেকটাই নিরবে কেটে ফেলা হলো ৫০০ বছরের পুরোনো একটি প্রাচীন ওক গাছ। এ ঘটনায় ক্ষোভের মুখে পড়েছে সেখানের আলোচিত টবি কারভেরি রেস্তোরাঁর একটি শাখা। বিষয়টি নিয়ে লন্ডন জুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ এই অপূরণীয় ক্ষতির জন্য ক্ষমা চেয়েছে। 

লন্ডনের এনফিল্ড বরোর হোয়াইটওয়েবস পার্কে রোস্ট ডিনারের জন্য জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ টবি কারভেরির এই শাখার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল প্রকাণ্ড আকৃতির ওই ওক গাছটি। গাছটি কেটে ফেলার পর গত ৩ এপ্রিল লন্ডন কাউন্সিলের কর্মীদের নজরে আসে। তারা দেখতে পায়, গাছটির বিচ্ছিন্ন ডালপালা ও কাঠের খণ্ড পড়ে আছে।

দ্য উডল্যান্ড ট্রাস্ট নামের এক ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ওই গাছটিকে লন্ডনের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে প্রাচীন গাছ হিসেবে বর্ণনা করেছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন টবি কারভেরির মালিক মিচেলস অ্যান্ড বাটলার্স। তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ গাছটি কাটার পরামর্শ পেয়েছেল ঠিকাদারের কাছ থেকে। বলা হয়েছিল- গাছটি সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে এনফিল্ড কাউন্সিলের এরগিন এরবিল নামের এক নেতা বলেন, কোনো অনুমতি বা পরামর্শ না নিয়েই ইজারাদার এই সুন্দর প্রাচীন ওক গাছটি কেটে ফেলেছে। যাতে আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি। আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে গাছটি জীবন্ত ছিল এবং যখন এই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়- তখন নতুন বসন্তের পাতা ছাড়তে শুরু করে গাছটি।

তিনি আরও বলেন, কাউন্সিল বিশ্বাস করে যে এই পদক্ষেপটি ইজারার শর্তাদি ভঙ্গ করেছে। গাছটি এই এলাকার প্রাচীনতম নিদর্শন ছিল এবং এটি কেটে ফেলা স্পষ্টত আইনের লঙ্ঘন। এই গাছটি অগণিত বন্যপ্রাণী, ছত্রাক এবং পরাগরেণুদের আবাসস্থল ছিল। এই গাছ আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ।

গাছটি কেটে ফেলার ঘটনায় এনফিল্ড কাউন্সিল এখন আইন পদক্ষেপের পথে হাঁটছে। গত ডিসেম্বরেও কাউন্সিলের এক পরিদর্শনে গাছটিতে সতেজ ও স্বাভাবিক মনে হয়েছে।

এদিকে, মিচেলস অ্যান্ড বাটলার্সের এক মুখপাত্র সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের কর্মী ও অতিথিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য গাছটি কেটে ফেলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। যদিও রেস্তোরাঁর সিইও ফিল আরবান গাছ কাটার ঘটনায় যে ক্রোধ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে- তার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওক প্রজাতির গাছ সাধারণত এক হাজার বাঁচতে পারে। স্থানীয়রা গাছটি কেটে ফেলার খবর শুনে বিধ্বস্ত হয়েছে। কেউ কেউ গাছটির ডালপালাসহ অনেকাংশ কেটে ফেলার পরও তা পুনরায় বেড়ে ওঠার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
 
বিষয়টি নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ  সার্ভিস এক বিবৃতিতে সিএনএনকে জানিয়েছে, তারা গাছ কাটার ঘটনাটি একটি নাগরিক বিষয় হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছে এবং এর তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, লন্ডনে এই ধরনের বিরল গাছ কেটে ফেলার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।

সূত্র : সিএনএন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here