লন্ডনের বুকে অবস্থিত হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের সাইনবোর্ডে নাম লেখা আছে বাংলা ভাষায়। ২০২২ সাল থেকে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার এই টিউব স্টেশনের নাম লেখা বাংলা ভাষায়। তবে এই বিষয়টা সহ্য হচ্ছে না ব্রিটিশ এমপি রুপার্ট লোয়ের। এই আবহে রুপার্ট সম্প্রতি একটি পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে তিনি লেখেন, “এটা লন্ডন- এখানে স্টেশনের নাম শুধুমাত্র ইংরেজিতেই লেখা উচিত… শুধু ইংরেজিতেই।”
আর রুপার্টের সেই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জবাব দিলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। অতি ডানপন্থী মনভাবাপন্ন মাস্ক রুপার্টকে সমর্থন করে একশব্দের জবাবে লেখেন- ‘হ্যাঁ’।
লন্ডনের ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন অথরিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম লেখা হয়েছিল ২০২২ সালে। ভারত ব্রিটিশ শাসনে থাকার সময় থেকেই লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল অঞ্চলে বসবাস করতে শুরু করেন বাঙালিরা। বর্তমানে এই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষই হল বাঙালি। ইংল্যান্ডের অধিকাংশ বাঙালিই থাকেন এই অঞ্চলে। এই অঞ্চলে আগে থেকেই বহু দোকানের নাম রয়েছে বাংলা ভাষায়। এই আবহে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম যাতে বাংলায় লেখা হয়। সেই দাবি মেনে বাংলা ভাষাকে সম্মান দেওয়ার জন্য সেখানকার স্টেশনের নামে বাংলা যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল লন্ডন প্রশাসন। এই স্টেশনের বিভিন্ন গেটের সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষায় নাম লেখার পাশাপশি স্টেশনের প্রবেশপথেও বাংলা ভাষাতে লেখা রয়েছে, “হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে আপনাকে স্বাগত।” তবে সেই বিষয়টি সহ্য হচ্ছে না ব্রিটেনের অতি ডানপন্থী এমপি রুপার্টের।
উল্লেখ্য, হোয়াইটচ্যাপেলের নাম বাংলা ভাষায় লেখা থাকায় আপত্তি তোলা রুপার্ট হলেন ‘রিফর্ম ইউকে’ রাজনৈতিক দলের এমপি। এই অতি ডানন্থী দলটি গঠন করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। নাইজেল ফারাজ এই রাজনৈতিক দলটির প্রধান। ব্রিটিশ সংসদের নিম্নকক্ষ বা হাউজ অব কমন্সের (৫০ আসন বিশিষ্ট) এই দলটির সদস্য সংখ্যা মাত্র ৫। এদিকে লন্ডনের এসেম্বলিতে (২৫ সদস্য বিশিষ্ট) রিফর্ম ইউকে’র সদস্য সংখ্যা মাত্র ১। রাজনৈতিকভাবে এই দলটি ততটাও প্রাসঙ্গিক না থাকলেও বিগত দিনে ইংল্যান্ডে অতি ডানপন্থার একটি ‘ঢেউ’ দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর থেকে।
অপরদিকে ইংল্যান্ড এবং ইউরোপের বিভিন্ন অতি ডানপন্থী রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তিত্বকে সরাসরি সমর্থন জানিয়ে আসছেন ইলন মাস্ক, যা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অন্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে মাস্কের বিরুদ্ধে। তবে তাতে তিনি ক্ষান্ত হচ্ছেন না। সূত্র: এনডিটিভি, দ্য হিন্দু