লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের আয়োজনে একুশের স্মরণে শ্রদ্ধা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

0

মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫’ পালন করেছে। উল্লেখ্য, ২০২৫ সালে “টেকসই উন্নয়নের জন্য ভাষা” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রজতজয়ন্তী পালিত হয়েছে। 

দিবসটি পালনের লক্ষ্যে, একুশের প্রথম প্রহরে হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম এবং টাওয়ার হ্যামলেটস-এর মেয়র লুৎফুর রহমান পূর্ব লন্ডনের শহীদ আলতাব আলি পার্কের শহীদ মিনারে একসাথে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় মিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে হাই কমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীতের মূর্ছনার সাথে হাইকমিশনার জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন।

সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে একটি বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমবেত কণ্ঠে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” গানটি পরিবেশন করেন। লন্ডন ও আয়ারল্যান্ডে বসবাসকারী বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদ, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ছাত্র-জনতার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তাঁদের আত্মার শান্তি এবং দেশের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এরপর মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং ইউনেস্কো মহাপরিচালকের বাণী পাঠ করা হয়।

বিশেষ আলোচনা পর্বে ক্যামডেন বারার মেয়র সমতা খাতুন, টাওয়ার হ্যামলেটস-এর স্পিকার জনাব সাইফুদ্দিন খালেদসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, “১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে ভাষা কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়; এটি আমাদের অস্তিত্ব, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বাহক। বর্তমানে বাংলা ভাষা বিশ্বের সপ্তম সর্বাধিক কথ্য ভাষা—এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রজন্মকে বাংলা ভাষা চর্চায় আগ্রহী করে তুলতে তিনি যুক্তরাজ্যের জাতীয় শিক্ষাক্রমে বাংলা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভা শেষে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি ও হাই কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।

শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here