রবিবার চাঁদ ছুঁতে গিয়ে চুরমার হয়ে গেছে রাশিয়ার স্বপ্ন। চাঁদের বুকে ভেঙে পড়েছে রুশ মহাকাশযান লুনা-২৫। এখনও পর্যন্ত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে কোনও দেশের মহাকাশযান সফলভাবে অবতরণ করতে পারেনি। সেই ইতিহাসের দোরগোড়ায় এখন দাঁড়িয়ে আছে ভারত। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামবে ভারতের পাঠানো মহাকাশযান ‘চন্দ্রযান-৩’। তবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর কাছে এক অগ্নিপরীক্ষাই বটে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যেই চাঁদের আরও কাছে পৌঁছে গেছে চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। রবিবার রাশিয়ার আশাভঙ্গের খবর প্রকাশ্যে আসার কিছুক্ষণ আগেই এক এক্স বার্তায় (সাবেক টুইট) চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণের সময় জানিয়ে দিয়েছে ইসরো।
এদিকে, রবিবার ইসরোর এক্স-বার্তার কিছু সময় পরই চন্দ্রাভিযানে রাশিয়ার স্বপ্নভঙ্গের খবর পাওয়া যায়, যা উস্কে দিয়েছে ২০১৯ সালে ভারতের চন্দ্রযান ২-এর স্মৃতি। সেবার চাঁদের মাটিতে সফল অবতরণ করতে পারেনি ভারতের চন্দ্রযান। সেবার চাদের বুকে ভারতেরও স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল।
২০১৯ সালের সেই ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার অনেক সাবধানেই চাঁদে পা রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত। সেই পরিকল্পনা অনেকটাই সফল হয়েছে। ধীরে ধীরে চাঁদের কাছে পৌঁছেছে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। মূল মহাকাশযান থেকে বিচ্ছেদের পর গতি কমিয়েছে ভারতীয় চন্দ্রযান। রবিবার দ্বিতীয় দফায় গতি আরও কমানো হয়। পাখির পালকের মতো আলতো করে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করানো হবে ভারতীয় চন্দ্রযানকে। যাকে ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’ বলা হয়। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’ করাই যেকোনও মহাকাশযানের কাছে চ্যালেঞ্জ, যা করতে ব্যর্থ হয়েছে রুশ যান। ভারতও ব্যর্থ হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। এখন ভারতের চন্দ্রযান বুধবার সেই লক্ষ্যপূরণ করতে পারে কি না, সেটাই দেখার।
গত ১৪ জুলাই চাঁদের দেশে পাড়ি দিয়েছিল ভারতের চন্দ্রযান-৩। প্রায় এক মাস পর রওনা দেয় রাশিয়ার মহাকাশযান। ১০ আগস্ট চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল লুনা-২৫। সোমবার চাঁদের মাটিতে নামার কথা ছিল রুশ মহাকাশযানের। এর জেরেই জল্পনা চলছিল, ভারতকে টেক্কা দিয়ে কি ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ ইতিহাস তৈরি করে ফেলবে? রবিবার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া। এবার ভারতের পালা। বুধবার কি ইতিহাস তৈরি হবে? স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটের অপেক্ষায় এখন বিশ্ববাসী।