ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এই নিষেধাজ্ঞার জেরে সতর্ক হয়ে গেছে অনেক দেশ। নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে সুরক্ষিত রাখার জন্য অনেক দেশই এখন বাইরের দেশে মজুত রাখা স্বর্ণ নিজ দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সার্বভৌম তহবিল ব্যবস্থাপকদের ওপর চালানো জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপটি চালিয়েছে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ইনভেসকো।
এই পরিস্থিতিতে স্বর্ণ ও উদীয়মান মার্কেট বন্ডকে ভালো বিনিয়োগ গণ্য করা হয়। কিন্তু গত বছর ইউক্রেনে হামলা চালানোর প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমারা রাশিয়ার ৬৪০ বিলিয়ন ডলারের স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জব্দ (ফ্রিজ) করায় অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক হয়ে যাচ্ছে।
ইনভেসকোর জরিপে দেখা গেছে, পশ্চিমাদের এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ‘উল্লেখযোগ্য অংশ’ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৬০ অংশগ্রহণকারী বলেছে, পশ্চিমাদের এই পদক্ষেপ স্বর্ণকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। আর ৬৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলছে, তারা নিজেরাই এখন স্বর্ণ মজুত রাখছে, ২০২০ সালে যা ৫০ শতাংশ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, “আমরা লন্ডনে স্বর্ণ রেখেছিলাম। …কিন্তু এখন আর্থিক নিরাপত্তা ও এই স্বর্ণ নিরাপদ রাখার জন্য সেগুলো নিজ দেশে ফিরিয়ে এনেছি।”
ইনভেসকোর অফিসিয়াল ইনস্টিটিউশনের প্রধান রড রিংরো বলেন, মোটামুটি সব কেন্দ্রীয় ব্যাংকই এখন এ কথা ভাবছে।
তিনি বলেন, গত এক বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মন্ত্র এমন হয়েছে যে, “নিজেদের স্বর্ণ আমরা নিজের দেশেই রাখতে চাই।”
এছাড়া ভূরাজনৈতিক উদ্বেগের কারণে কয়েকটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ হিসেবে ডলার ছাড়াও অন্যান্য মাধ্যমেও আগ্রহী হয়ে উঠছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মনে করে, আগামী দশকের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হবে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা। আর ৮৩ শতাংশ মনে করে, আগামী ১২ মাসে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হবে। এছাড়া চীনা ইউয়ানকে সম্ভাবনাময় মুদ্রা হিসেবে দেখে ১৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান, গত বছর যা ২৯ শতাংশ ছিল। সূত্র: রয়টার্স, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস