রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস বন্ধ রয়েছে। তিন দিন আগে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শত শত রোগীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া ওই ওয়ার্ডের রোগীদের সব ধরনের উপকরণ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। ফলে রোগীদের অর্থিক খরচের পাশাপাশি চিকিৎসায় ভোগান্তি বাড়ছে। অনেকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
হৃদরোগ বিভাগের ইকো মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘ দিন। এছাড়া ৫০০ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে ২ হাজারের বেশি রোগীর চিকিৎসা সেবা। ১ হাজার ৮৭৫ জন জনবলের বিপরীতে শূন্য পদ রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩’শ।
রোগীর স্বজন মিঠাপুরের বাসিন্দা আশুরা বেগম বলেন, তিনি তার স্বামীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। বর্তমানে ডায়ালাইসিস বন্ধ রয়েছে। সব ধরণের উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
জানাগেছে, একজন কিডনি রোগী টাকা জমা দিয়ে সপ্তাহে দু’দিন করে ৪৮ বার ডায়ালাইসিস করাতে পারেন। এটি রোগীদের প্যাকেজ সুবিধা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যাদের দুটো কিডনি বিকল, একমাত্র তাদের সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করানো হয়। আগে সব ধরনের উপকরণ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হতো। কয়েক মাস ধরে প্রত্যেক রোগীকে ডায়ালাইসিসের সব উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১০০০ হলে জনবল রয়েছে ৫০০ শয্যার। এখানে রয়েছে ইনডোর বিভাগ,আউটডোর বিভাগ,জরুরি বিভাগ ও এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। এছাড়াও ডায়রিয়া ট্রেনিং ইউনিট, ইপিআই প্রোগ্রাম, ইওসি কার্যক্রম, ডটস কর্ণার, এম,আর ক্লিনিক, মডেল ফ্যামিলি প্লানিং ক্লিনিক,ব্রেষ্ট ফিডিং সেন্টার,সমাজ সেবা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।
হৃদরোগ বিভাগের ইকো মেশিনের সবগুলোই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। হৃদরোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে শুধু ইসিজি নির্ভর। ইকোমেশিন না থাকায় হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যা চিহ্নিত করতে পারছে না রোগীরা। ফলে অনেক রোগী মৃত্যুবরণও করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালের সিটিস্ক্যান মেশিনটিও দীর্ঘদিন থেকে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে রোগীদের সিটিস্ক্যান বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ এমআরআই মেশিনটিও নষ্ট। সবমিলিয়ে দেখা গেছে হাসপাতালে শুধু নাই আর নাই।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুস আলী বলেন, বিদ্যুতের শর্টসার্কিটের কারণে সমস্যা হওয়ায় ডালালাইসিস বন্ধ রয়েছে। আজ ঢাকা থেকে টেকনেশিয়ান আসার কথা রয়েছে। দুই একদিনে মধ্যে আবার ডায়ালাইসিস শুরু হবে।