কাপ্তাই হ্রদের নীল জলরাশির মাঝখানে ছোট্ট একটি দ্বীপ। চারপাশে সবুজ গাছপালা, পাখির কলকাকলি আর স্বচ্ছ জলের মৃদু ঢেউ। সেই দ্বীপেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন দেশের সূর্যসন্তান, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ। মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে নতুন রঙ ও নকশায় সাজানো হয়েছে তার সমাধিস্থল।
রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট এলাকায় অবস্থিত এই সমাধিস্থলে যেতে রাঙামাটি শহর থেকে জলপথে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। দ্বীপটির চারপাশে ইট ও পাথরের শক্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। দূর থেকে নজর কাড়তে বাঁধের পাথরে আঁকা হয়েছে সাদা ও মেরুন রঙের আলপনা। সিঁড়ি থেকে শুরু করে সমাধিস্থলের প্রতিটি অংশ সাজানো হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। ধবধবে সাদা টাইলস ও মার্বেল পাথরে নির্মিত সমাধিটি নতুন করে রঙ ও পরিচর্যায় আরও দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধি পান মুন্সী আব্দুর রউফ। তিনি ৮ এপ্রিল রাঙামাটির বুড়িঘাট এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মেশিনগান নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে শহীদ হন। পরবর্তীতে এখানেই নির্মিত হয় তার সমাধিস্থল।
প্রতি বছর বিজয় দিবসে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এই সমাধিস্থলে এসে শ্রদ্ধা জানান। সে কারণেই ১৬ ডিসেম্বর সামনে রেখে নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে এই স্থান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাঙালি জাতির বিজয়ের দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপনের জন্যই এই উদ্যোগ।
এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে রাঙামাটি শহরেও চলছে প্রস্তুতি। রিজার্ভমুখ এলাকায় শহীদ মিনার চত্বরে চলছে রং করা, পুরোনো প্লাস্টার তুলে নতুনভাবে সংস্কার, বসানো হচ্ছে রঙিন আলো। শহরের বিভিন্ন স্থানে লাল-সবুজ আলোকসজ্জা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক নাজমা আশরাফী বলেন, রাঙামাটিবাসী যাতে যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৬ ডিসেম্বর উদ্যাপন করতে পারে, সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি কুচকাওয়াজ ও বিভিন্ন কর্মসূচি থাকবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

