রংপুর অঞ্চলে বিশেষ জাতের ধান থেকে তৈরি সুগন্ধি চাল কৃষি ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব ঘটিয়েছে। মাত্র ৭ বছরে এই ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সুগন্ধি ধানের জাতগুলোর মধ্যে চিনিগুড়া, কালিজিরা ও কাটারিভোগ ধানের আতপ চালের পোলাও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এসব ধান কৃষি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এই চাল এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় বোরো এবং আমন মৌসুমে ৩৪ হাজার ৫৯৬ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বোরো মৌসুমে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর এবং আমন মৌসুমে ৩২ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধান আবাদ হয়েছে।
তাই কৃষকেরা এ ধানের আবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। তাছাড়া আলোক সংবেদনশীল হওয়ায় আমনে বন্যাপ্রবণ এলাকায় নাবীতে রোপণ উপযোগী এ ধান। এর কোনো কোনোটি ২ দশমিক ৭ মেট্রিক টন আবার কোনোটি ৪ থেকে সাড়ে ৪ মেট্রিক উৎপাদন হয়। এসব ধান সুগন্ধিযুক্ত এবং খেতেও সুস্বাদু।
অপরদিকে বোরো মৌসুমে সুগন্ধিযুক্ত আধুনিক জাত হচ্ছে ব্রি ধান ৫০ (বাংলামতি)। এ জাতের চালের মান বাসমতির মতই। হেক্টর প্রতি ফলন হয় ৪ মেট্রিক টন। এই ধান বোরো মৌসুমে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ এবং রোপা আমন মৌসুমে ৫-২৫ জুলাই পর্যন্ত বীজতলা করতে হয়। তবে স্বল্পমেয়াদি জাতের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের ২য় বা ৩য় সপ্তাহে বপন করার উত্তম সময় বলে মনে করে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের বুড়িহাট হটিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু সায়েম জানান, অনেক ক্ষেত্রে এ দেশি অতি উন্নতমানের সুগন্ধি চালের জাতগুলো সম্পর্কে ধারণা ও প্রচারণার অভাব থাকায় নামি-দামি হোটেলে আমাদের জনপ্রিয় সুগন্ধি ধানের পরিবর্তে বিদেশি বাসমতি জাতের চাল ব্যবহার প্রচলন দেখা যায়। বর্তমান সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে সুগন্ধি ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।