রংপুরে সাড়ে ৪ মাস পরে বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এই বৃষ্টিতে জনমনে কিছুটা স্বস্তি এলে ক্ষেতের আলু, গম ও আমের মুকুল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকলে এই তিনটি ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এমনটাই শঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত রংপুর অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের হার ছিল শূন্যের কোঠায়। এই অঞ্চলের মানুষ গত সাড়ে ৪ মাস থেকে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিল। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় খরার ঝুঁকিতে পড়েছিল।
জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এ বছর এক লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। কৃষকরা বেশি দাম পাওয়ায় পরিপক্ক হওয়ার আগে ক্ষেতেই আলু বিক্রি করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ৮০/৮৫ শতাংশ জমির আলু উত্তোলন করা হয়েছে। বর্তমানে ক্ষেতে থাকা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আলু বৃষ্টির কারণে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
এদিকে, ক্ষেতে পরিপক্ক অবস্থায় রয়েছে গম। অনেক স্থানে কাটামাড়াই শুরু হওয়ার পথে। বৃষ্টিপাতের ফলে পরিপক্ক গমের ক্ষতি হবে। এমনটা জানিয়েছেন কাউনিয়া উপজেলার কৃষক আফজাল হোসেন।
অপরদিকে, বৃষ্টির কারণে হাড়িভাঙ্গাসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমে ইতিবাচক ও নেতিবাচক এই দুই প্রভাবই পড়েছে। যে সব আম গাছে এখন মুকুল রয়েছে বৃষ্টির কারণে সেই মুকুল ঝরে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তবে যে সব গাছে আমের গুটি বেরিয়েছে সেসব আম গাছের উপকার হবে। বৃষ্টিতে গুটির উপকারি হলেও মুকুলের জন্য ক্ষতি ডেকে এনেছে বৃষ্টি।
রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন,গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এ ধরণের আবহাওয়া আরও দুইএকদিন থাকতে পারে।
এদিকে, রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, প্রায় ৯০ শতাংশ আলু উত্তোলন হয়েছে। কৃষকরা এখন অনেক সচেতন। তারা বৃষ্টির পানি সরিয়ে আলু উত্তোলন করে ফেলবেন।
তিনি বলেন, গমের কিছুটা ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া মুকুলের কিছুটা ক্ষতি হলেও আমের গুটির উপকার হবে। ধানসহ অন্যান্য ফসলের উপকার হয়েছে বৃষ্টির ফলে।